সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাষ্টমীর গোটা দিনই কখনও ঝিরঝিরে, কখনও আবার মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে শহরে। যদিও উৎসবমুখর বাঙালি সে সব থোরাই কেয়ার করে? তাই মহাষ্টমীর সন্ধ্যাতেও জনজোয়ারে ভেসেছে তিলোত্তমা। উত্তর থেকে দক্ষিণ- লোকে লোকারণ্য। শহরবাসীর শারদীয়া মেজাজে থাবা বসাতে পারেনি বৃষ্টি। কিন্তু প্রকৃতির সঙ্গে আর কাঁহাতক লড়াই চলে? নবমীর সকাল থেকেও শহরের সব প্রান্তেই বৃষ্টি হয়েছে এবং হচ্ছে। তবে আবহাওয়া দপ্তরের তরফে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির কথা বলা হলেও আকাশের মন বুঝতে পেরেই বিকল্প পরিকল্পনা সেরেছে বাঙালি। নবমীতে কেউ দিনের পরিবর্তে রাতে ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা নিয়েছেন, আবার কেউ সোজা ঢুঁ মারার প্ল্যান কষছেন মাল্টিপ্লেক্সে। এমনিতেই এবার পুজোয় একসঙ্গে আধডজনেরও বেশি বাংলা সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। বৃষ্টি দেখে ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা আপাতত হল্ট করে, অনেকেই ভিড় করেছেন সিনেমা হলে।
[আবাসনের পুজোয় সেরার স্বীকৃতি কোন পুজোগুলির দখলে?]
অনেকে আবার নবমীর জন্য যে পোশাকটা পরবেন বলে ভেবেছিলেন, সেটা বৃষ্টির চোটে পরতে না পেরে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।কেউ কেউ আবার ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা বাতিল করে নিখাদ পুজোর আড্ডায় মেতে উঠেছেন। কেউ তৃতীয়া থেকে ঠাকুর দেখে আপাতত এবারের মতো প্যান্ডেল হপিং শেষ করে আজকের দিনটা বাড়িতেই রয়ে সয়ে কাটাবেন ঠিক করেছেন। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব যে বৃষ্টির জন্য পণ্ড হতে পারে তা আগেভাগেই সতর্ক করেছিলেন আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস ছিলই, নবমীতে কিছুটা বাড়তে পারে বৃষ্টি। যা শুনে কার্যত মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তা থেকে দর্শনার্থী সবারই। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, উত্তর—পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। যার জেরেই এই বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণা বাতাসের গতি কিছুটা বেড়েছে। যার জেরেই রাজ্যের আকাশে মূলত দক্ষিণবঙ্গ ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ঢুকে পড়েছে প্রচুর পরিমাণে আর্দ্রতা। এর জেরেই ভেজা বাতাসকে ঠেলে উপরের দিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে শুষ্ক বাতাস। তার জেরেই স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘের সঞ্চার হচ্ছে। তা থেকেই দফায় দফায় হচ্ছে বৃষ্টি।
[ঘূর্ণাবর্তের ভ্রুকুটি, সপ্তমী থেকেই শুরু বৃষ্টি ]
আবহাওয়াবিদরা আরও জানাচ্ছেন, উপগ্রহ চিত্রে দক্ষিণবঙ্গের আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘ জমতে দেখা গিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, বাংলার আশপাশে রয়েছে উত্তর-পূর্ব ঘূর্ণাবর্ত। যেটি আজ বাংলাদেশে প্রবেশ করার কথা রয়েছে। যার জেরে উত্তরবঙ্গে ব্যাপক বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গ-সহ কলকাতায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হবে দফায় দফায়। বর্ষার হাত ধরেই পুজো এবারের মতো সাঙ্গ হবে বলেই মত আবহাওয়াবিদদের। এই পূর্বাভাস শুধুমাত্র কলকাতার জন্য নয়। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূমের কিছু অংশ এবং পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুরের কপালেও নাচছে বৃষ্টির বাগড়া। মৌসম ভবনের হিসাব অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঢোকার কথা ৮ জুন। বিদায় নেওয়ার কথা ১০ অক্টোবর। কিন্তু পুজোর আবহ বদলে গিয়েছে পুজোর সময়ের পরিবেশও। এখন বর্ষা দেরি করে আসছে। যাচ্ছেও দেরি করে। দেখা যাচ্ছে বর্ষা পিছিয়ে গিয়েছে অনেকটাই। আবহাওয়াবিদরা দেখেছেন, ১০ অক্টোবর বর্ষা বিদায় তো নিচ্ছেই না, থেকে যাচ্ছে অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত।
[সাবধান! সেলফি তুললে এই মণ্ডপে বাজেয়াপ্ত হবে আপনার মোবাইল]
The post নবমীর সকাল থেকেই মুখ ভার আকাশের, সন্ধ্যায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা appeared first on Sangbad Pratidin.
