shono
Advertisement

ডিজিটাল গ্রেপ্তারির নামে ৫ দিন বাড়িতে বন্দি! শেষপর্যন্ত জামাইয়ের বুদ্ধিতে রক্ষা

প্রতি তিন ঘন্টা অন্তর নিজের গতিবিধি সম্পর্কে অভিযুক্তদের জানাতে বাধ্য করা হয়।
Published By: Paramita PaulPosted: 09:20 PM Jun 11, 2025Updated: 09:20 PM Jun 11, 2025

জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: এবার ডিজিটাল অ্যারেস্টের শিকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা সমাজকর্মী। টানা পাঁচদিন ঘরে আটকে তিনি। অবশেষে আইনজীবী মেয়ে ও জামাইয়ের পরামর্শে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থানার অন্তর্গত প্রতাপগড় এলাকায়।

Advertisement

এই এলাকার বাসিন্দা অজয় মজুমদার। বনগাঁ শহরের অন্যতম পরিচিত ব্যক্তিত্ব অজয়বাবু শিক্ষকতা, লেখালেখি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত। অজয়বাবু জানান, গত ৫ তারিখ কল্যাণীতে মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। সেখানেই প্রথম ফোন আসে, অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয় ভারতীয় টেলিফোন রেগুলেটর অথরিটির পক্ষ থেকে ফোন করা হয়েছে, ফোনটি ট্রান্সফার করা হচ্ছে সিবিআই এর হাতে। এরপর অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি নিজেকে তদন্তকারী অফিসার পরিচয় দেন। জানানন, অজয়বাবুর প্যান, আধার ব্যবহার করে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। সেই অ্যাকাউন্টে কয়েক কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। যে টাকাগুলি অভিযুক্তরা অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছে। তার একটি লভ্যাংশ অজয়বাবুকেও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন প্রতারকরা। অজয় বাবু জানান, এরপর ক্রমাগত বিভিন্নভাবে তাকে কখনও সুপ্রিম কোর্টের কাগজ, এমনকী, প্রতি তিন ঘন্টা অন্তর নিজের গতিবিধি সম্পর্কে অভিযুক্তদের জানাতে বাধ্য করা হয়। তাদের কথা মত চলতে থাকেন দম্পতি। এভাবে বেশ কয়েকটি দিন পার হয়ে যায়। অভিযুক্তরা ভয় দেখিয়ে জানিয়েছিল এ কথা কাউকে জানালে দম্পতির বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা ও জেল হবে। সে কারণে বিষয়টি তারা কাউকে জানাননি। এমনকি মেয়ে-জামাইকেও না।

অজয়বাবুর স্ত্রী দেবযানী দেবী বলেন, "মেয়ের বিয়ের পর থেকে আমরা দুজন বাড়িতে থাকি। প্রথম দিকে আমাদের কিছুটা সন্দেহ হয়েছিল ঠিকই, তবে তাদের কথায়, আমরা কেমন যেন মোহের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম। তারা যা বলছিল আমরা তাই পালন করছিলাম। শেষমেষ তারা জানায় আমাদের যে বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার সমস্ত টাকা এক জায়গায় করে তাদের দেওয়া একটি অ্যাকাউন্ট নম্বরে পাঠাতে হবে। সে সময় আমি লুকিয়ে গিয়ে আমার মেয়েকে ফোন করি।" গত ৯ তারিখ বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অজয়বাবু।

এ বিষয়ে অজয় বাবুর বন্ধু কথা সমাজকর্মী দেবাশিস রায়চৌধুরী বলেন, "সরকারিভাবে বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে সচেতন করা হচ্ছে, অজয়বাবু একজন সচেতন মানুষ তা সত্ত্বেও তাদের ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছিলেন। তবে রক্ষা একটুর জন্য বড়সড়ো আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছেন। সকলের কাছে আবেদন অবাঞ্ছিত ভিডিও কল, ফোন কল এড়িয়ে চলুন। কোনওরকম সমস্যা হলে প্রশাসনের সাহায্য নিন।" একইকথা বলছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে সাইবার প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে একমাত্র উপায় সতর্কতা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • এবার ডিজিটাল অ্যারেস্টের শিকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তথা সমাজকর্মী।
  • টানা পাঁচদিন ঘরে আটকে তিনি।
  • অবশেষে আইনজীবী মেয়ে ও জামাইয়ের পরামর্শে বনগাঁ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
Advertisement