বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: মাত্র সাড়ে ৩ হাজার টাকা চুরির অভিযোগে ছেলেকে পিটিয়ে খুন (Murder)! এহেন নৃশংস কাণ্ড ঘটিয়ে পুলিশের জালে বাবা ও দাদা। ঘটনাটি নদিয়ার রানাঘাট (Ranaghat) পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কৃপাময়ীতলা এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছেলের নাম চন্দন ঘোষ, বয়স ৩৮ বছর। খুনের ঘটনার কথা মা স্বীকার করে নিয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।
রানাঘাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কৃপাময়ীতলার বাসিন্দা চন্দন ঘোষ। কাছাকাছিই বাড়ি তাঁর বাবা নেপাল ঘোষের বাড়ি। গত পাঁচ বছর ধরে রানাঘাট পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে থাকছিলেন চন্দন ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী মুনমুন। চন্দন রানাঘাট কলেজের কাছে একটি সয়াবিন কারখানায় কাজ করতেন। সংসার চালানোর তাগিদে তাঁর স্ত্রীও অন্য একটি কাজ করেন। তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কিন্তু সেই পুত্রসন্তান তাঁর দাদুর নেপাল ঘোষের কাছেই থাকে। ভাড়াবাড়িতে থাকলেও চন্দন ঘোষ মাঝেমধ্যেই তাঁর বাপের বাড়িতে চলে যেতেন।
[আরও পড়ুন: জঙ্গিদের টার্গেট এবার উপত্যকার লিথিয়াম খনি! কেনাবেচা করলেই হামলার হুমকি জইশের সঙ্গীর]
চন্দন ঘোষের মা লক্ষ্মী ঘোষের অভিযোগ, ”আমার ছোট ছেলে জুয়া ও মদের নেশা করত। মাঝেমধ্যেই এই বাড়িতে এসে ও বিভিন্ন জিনিস চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। এর আগে ওর বাবার গাড়ির ব্যাটারি, কল এবং গেট চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। শুক্রবার ওর বাবার বাক্সের লক ভেঙে সাড়ে তিন হাজার টাকা চুরি করেছে। তাতেই ওর বাবার প্রচণ্ড রাগ হয়ে গিয়েছিল। রবিবার সেই কথা জানার পর ওর বাবা নেপাল ঘোষ ওকে মারধর করেছে। ওর দাদা প্রদীপ ঘোষও মারধর করেছে।”
[আরও পড়ুন: সামাজিক প্রকল্পে জোর, কেন্দ্রীয় বঞ্চনা রুখে বিকল্প আয়ের দিশা রাজ্য বাজেটে]
মৃতের স্ত্রী মুনমুন জানান, ”ওর বাবা ও দাদা ওকে খুব মেরেছে। ওর মা কিন্তু ঠেকায়নি। ও ওই বাড়িতে গিয়েছিল। ওখানে কী হয়েছে, আমি সঠিক জানি না। শুধু ওর কাছ থেকে জানতে পারি, আমার শ্বশুর ও ভাসুর ওকে খুব মেরেছে। আমি ওর বাবাকে ফোন করেছিলাম।ওর বাবা আমার ফোন ধরেনি।আমি চেয়েছিলাম আমার স্বামীকে হাসপাতলে নিয়ে যেতে।তাই সাহায্য চাওয়ার জন্য ফোন করেছিলাম। কিন্তু ফোন ধরেনি। ওরাই আমার স্বামীকে পিটিয়ে মেরেছে। আমি চাই,ওদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হোক।” ছেলেকে পেটানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নেপাল ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মী ঘোষ। নেপাল ঘোষের দাবি, ”আমি হাসপাতালে ছিলাম। হাসপাতাল থেকে ফিরে দেখি, আমার বাড়ির বাক্স ভেঙে আবার সাড়ে তিন হাজার টাকা চুরি করেছে চন্দন। এর আগে অনেকবার চুরি করেছে। তাই আর রাগ সহ্য করতে পারিনি। কলের পাইপ দিয়ে পিটিয়েছি।” তাকে এবং মৃতের দাদাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।