নন্দন দত্ত, বীরভূম: সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে মৃত্যু হয়েছে স্বামীর। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থার উপর আস্থা হারান লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবি। স্বামীর তদন্তের ভার নিক সিআইডি, এমন আরজিই জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে বগটুই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখ মুত্যুরহস্য উদ্ধারের দায়ভার দেওয়া হয়েছে সিআইডির উপর। এবার রেশমা বিবির অভিযোগের ভিত্তিতেই সিবিআইয়ের ডিআইজি, এসপি-সহ কেন্দ্রীয় সংস্থার সাতজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে FIR করা হল। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা-সহ ৯টি ধারায় মামলা রুজু করেছে রামপুরহাট থানা।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৩০২ ধারায় খুন, ৩২৩ ও ৩২৫ ধারায় মারধর ও গভীর আঘাত হেনে মারধর, ১২০বি ষড়যন্ত্র, ৪৪৮ অনধিকার প্রবেশ, ৫০৯ মহিলার সন্মানহানি-সহ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগের মতো ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই মামলা রামপুরহাট মহ্কুমা আদালতের এসিজেএমের এজলাসে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ইতিমধ্যেই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের পর লালন শেখের দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে। আগে তাঁরা দাবি করেছিলেন, অভিযুক্তরা শাস্তি না পেলে লালনের দেহ নেবেন না। তবে তদন্ত ভার সিআইডির হাতে যাওয়ায় এদিন দেহ নিতে রাজি হন পরিবারের সদস্যরা। তবে দেহ নিয়ে প্রথমে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের বাইরে বিক্ষোভ দেখান। অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবি তোলা হয়। এরপর ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কেও বিক্ষোভ করেন লালনের পরিবারের সদস্যরা। তবে পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
[আরও পড়ুন: হরিপালে নয়ানজুলিতে উলটে গেল যাত্রী ভরতি বাস, মৃত্যু একজনের, জখম কমপক্ষে ৬০]
এদিন সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের সামনে আগেভাগেই পুলিশ মোতায়েন করা হয়। রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের বাইরে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। গার্ডরেল দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার অস্থায়ী ক্যাম্পটিকে। উল্লেখ্য, সোমবার সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন লালন শেখের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় রামপুরহাটের (Rampurhat) অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচালয়ে। এরপর থেকেই ওই ক্যাম্পের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন লালন শেখের পরিবার ও গ্রামের প্রতিবেশীরা। সিবিআইয়ের শাস্তির দাবিতে তীব্র বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এদিন তেমন কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেই কারণেই পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধের পর বগটুই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত, মৃত লালন শেখের স্ত্রীর আবেদন মেনে ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করে সিআইডি। জানা যায়, দায়িত্ব নিয়েই কাজ শুরু করে দেয় পাঁচ সদস্যের সিআইডির একটি দল। ঘটনাস্থল রামপুরহাটে গিয়ে লালন শেখের বাড়ির সিল খুলে দেওয়া হয়। বুধবার লালনকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অশান্তি এড়াতে ইতিমধ্যেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জেলাপুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, পরিবারের আবেদনেই পুলিশি নিরাপত্তার করা হয়েছে।
