সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে টানাপোড়ন শেষ। অবশেষে সরকারি নিয়ম মেনে উপকূলরক্ষী বাহিনীর হস্তক্ষেপে নিজেদের ঘরে ফিরছেন দুদেশে আটকে পড়া মৎস্যজীবীরা। রবিবার মৎস্যজীবীদের নিয়ে উপকূল রক্ষী বাহিনীর ঐতিহাসিক বিনিময় হতে চলেছে বঙ্গোপসাগরে, দুদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা। তার আগে শনিবারই ভারতে আটকে থাকা ৯০ জন বাংলাদেশি জেলে এবং ওপার বাংলায় থাকা ৯৫ জন মৎস্যজীবীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে এসেছে দুদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী। রবিবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে কাকদ্বীপ ও নামখানায় নিজেদের বাড়িতে ফিরবেন বাংলার ৯৫ জন জেলে।
ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ছেড়ে দিল বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী। নিজস্ব ছবি।
সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানিয়েছেন, শনিবার সকালে কাকদ্বীপ থেকে ১২ জন ও ওড়িশায় আটকে থাকা ৭৮ জন হলদিয়ার বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে হলদিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে ৯০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবী ফিরবেন বাংলাদেশে। অন্যদিকে, ওপার বাংলার জেল থেকে ইতিমধ্যে মুক্তি পেয়েছেন ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী। তাঁদের অধিকাংশের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানায়। রবিবার অবশেষে ঘরে ফিরতে পারবেন তাঁরা। প্রিয়জনদের ফেরার খবরে স্বভাবতই এতদিনের চিন্তা কেটেছে পরিবারগুলিতে। মুখে হাসি ফুটেছে তাঁদের। বাড়ির বউরা বলছেন, স্বামীরা সেখান থেকে বোটে ওঠে তাঁদের ছবি পাঠিয়ে নিশ্চিত করেছেন যে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরছেন।
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ জল সীমানায় ঢুকে পড়ার অভিযোগে আটক করা হয় ডায়মন্ড হারবারের ৬ টি ট্রলারকে। গ্রেপ্তার হন ৯৫ জন জেলে। পটুয়াখালিতে নিয়ে দিয়ে তাঁদের জেলবন্দি করা হয়, অনুপ্রবেশের মামলাও দায়ের হয়। আটক হওয়া মৎস্যজীবীদের ছাড়তে কেন্দ্রের উপর চাপ সৃষ্টি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, ভারতের জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি জেলেদেরও দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলেন তিনি। এরপর কেন্দ্র তৎপর হয়। দুদেশের আলোচনার পর বিনিময় চুক্তি মেনে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করে নেয় ইউনুস সরকার। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই তাঁদের মুক্তি দেওয়া হল। জানা গিয়েছে, নিজেদের ট্রলার নিয়েই ফিরবেন কাকদ্বীপ, নামখানার মৎস্যজীবীরা। প্রশাসন সূত্রে আরও খবর, ৬ জানুয়ারি গঙ্গাসাগরে নিয়ে যাওয়া হবে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের। সেসময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গাসাগরে থাকবেন। তাঁর মঞ্চে দেখা যেতে পারে মৎস্যজীবী পরিবারগুলিকেও।