অর্ণব দাস, বারাসত: ধরাধামে এসেছে মাত্র ৫ বছর হল। এরই মধ্যে দু’পা, দু’হাতের জাদুতে সকলের চোখ কপালে তুলে রেকর্ডের অধিকারিণী হয়ে গিয়েছে উত্তর চব্বিশ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা প্রমা পাল। দেশীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যশৈলী ভরতনাট্যমে সবচেয়ে কম সময় মাত্র ২৮ সেকেন্ডে ৫২ টি হস্তমুদ্রা প্রদর্শন করে রীতিমতো চর্চায় প্রমা। আর তার জেরেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস, ২০২১-এ ((India Book of Records 2021) নাম তুলে নিয়েছে কেজি পড়ুয়া এই খুদে। মাত্র ৫ বছরের প্রমার এহেন সাফল্যে খুশি পরিবার, আত্মীয়স্বজন থেকে প্রতিবেশীরা। আর, সে নিজে? একমুখ হেসে জানিয়েছে, সে-ও খুশি।
মধ্যমগ্রাম (Madhyamgram) ২ নম্বর বসুনগরের বাসিন্দা প্রমা পানিহাটির একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়া। বাবা কুন্তল পাল বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। মা পূর্বিতা সাহা পাল মসলন্দপুর রাজবল্লভপুর হাই স্কুলের শিক্ষিকা। ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি আকর্ষণ দেখে তিন বছর বয়সে মেয়েকে নাচের স্কুলে ভরতি করে দেন বাবা-মা। নিয়মিত শিখতে শিখতে প্রমার মা পূর্বিতাদেবী সম্প্রতি লক্ষ্য করেন, খুব কম সময়ের মধ্যে তাঁর মেয়ে ভরতনাট্যমের সংযুক্ত এবং অসংযুক্ত মিলিয়ে মোট ৫২টি হস্তমুদ্রা রপ্ত করে ফেলেছে।
[আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় নগ্ন ছবি পোস্ট, কিশোরীর কীর্তি জানতে পারায় হার্ট অ্যাটাক বাবা-মার]
তাঁর মাথায় আসে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের বিষয়টি। সেইমতো তিনি প্রমার ২৮ সেকেন্ডে ৫২টি হস্তমুদ্রা করা নাচের ভিডিও সংস্থায় পাঠান। এরপরই ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস থেকে তাঁদের জানানো হয়, সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে হস্তমুদ্রাগুলি করে রেকর্ডের অধিকারী হয়েছে প্রমা। মেয়ের সাফল্যে যারপরনাই খুশি পূর্বিতা ও কুন্তল। এদিন পূর্বিতা বলেন, “অভিভাবক হিসাবে মেয়ের এই সাফল্যে আমরা খুবই খুশি। তবে প্রমার এই সাফল্যের পিছনে তার নাচের শিক্ষিকা রূপা সরকারের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তিনি ধৈর্যের সঙ্গে মেয়েকে এতটা পারদর্শী করে তুলেছেন। ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে নাম পাঠানোর জন্য মোট কুড়িটি ভিডিও পাঠাতে হয়েছিল। সেই জন্য ৬০টিরও বেশি ভিডিও শুট করতে হয়েছে। পুরো সময়টাই ধৈর্যের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে প্রমা।”
তবে, এখানেই থেমে থাকতে চায় না একরত্তি। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডসে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রস্তুতিও নিতে শুরু করে দিয়েছে সে। শুধু নাচ নয়, শাস্ত্রীয় সংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, ছবি আঁকাতেও সমান উৎসাহ রয়েছে তার। প্রমার এই সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। তিনি বলেন, “মধ্যমগ্রামের মেয়ে এত বড় সাফল্য পাওয়ায় আমিও গর্বিত। এত কম বয়সে এমন প্রতিভা ঈশ্বরদত্ত বলে মনে করি। ভবিষ্যতে প্রমা তার সৃজনশীলতার মাধ্যমে আরও নাম করুক, খ্যাতি অর্জন করুক।”