সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: চৈত্রের শুরুতেই পশ্চিমাঞ্চলে দাপট দেখাচ্ছে কালবৈশাখী। গত সপ্তাহের শেষ থেকেই এই ঝড়বৃষ্টি চলছে পুরুলিয়ায়। তার জেরে পলাশের বিপুল ক্ষতি। হতাশ পর্যটকরা।

শুক্রবার এই ঝড়বৃষ্টিতে বরাবাজার ও পাড়ায় বজ্রপাতে মৃত্যু হল ২ জনের। বরাবাজারের বাজরা গ্রামে একটি নির্মীয়মান বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে রাজমিস্ত্রি, শ্রমিক ও ওই পরিবারের আত্মীয়-সহ মোট ৪ জন জখম হন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদেরকে ওই বাজরা গ্রাম লাগোয়া চাকলতোড় গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজমিস্ত্রি আনন্দ মাঝিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। জখম ওই পরিবারের আত্মীয়র অবস্থা গুরুতর। তাঁকে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পাড়ার ভালাগোড়া গ্রামে ইটভাটায় কাজ করার সময় আরশাদ আনসারি নামে এক শ্রমিক বজ্রপাতে জখম হন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে মৃত বলে জানান। ওই শ্রমিকের বাড়ি ভালাগোড়া গ্রামে। এদিন বান্দোয়ান, মানবাজার, বলরামপুরে শিলাবৃষ্টি হয়। বলরামপুরে ঝড়-বৃষ্টিতে একাধিক জায়গায় জল জমে যায়। জেলার নিরিখে বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত ৮.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এদিন পুরুলিয়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৪.৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। এক ধাক্কায় তাপমাত্রা অনেকটাই নেমে যায়। যেখানে গত রবিবার এই জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এই ঝড়বৃষ্টিতে পলাশ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে হতাশ পর্যটকরা।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই জেলার বিভিন্ন ব্লকে ঝড়বৃষ্টি হয়। শুক্রবার সকালেই আকাশের মুখ কালো হয়ে যায় বলরামপুরে। প্রায় ৫০-৬০ কিমি বেগে এদিন ঝড় হয় ওই ব্লক সদরে। ফলে বলরামপুর ছাড়াও বলরামপুর-বাঘমুন্ডি সড়ক পথে বহু গাছ পড়ে যায়। বলরামপুর চকবাজার এলাকা একেবারে জলে থইথই করতে থাকে। সমস্যা হয় যান চলাচলেও।
বলরামপুরের গোশালার ভেতরে গবাদি পশুর আশ্রয়স্থলের ছাউনি ঝড়ে উড়ে যায়। ওই টিনের চালা উড়ে গিয়ে গাছের উপরে পড়ে। তবে শুধু বলরামপুর নয়। বাঘমুন্ডি, ঝালদা, জয়পুর, কোটশিলা, পুরুলিয়া মফস্বল, পুরুলিয়া শহর, রঘুনাথপুর ও মানবাজার মহকুমা জুড়ে বৃষ্টি হয়। শনিবার বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই ঝড়-বৃষ্টির কমলা সতর্কতা রয়েছে। বলরামপুরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় ২৩.৪ মিলিমিটার। বরাবাজারে ২০, বাঘমুন্ডিতে ১৬.২, ঝালদায় ৪.৬, সাঁতুড়িতে ৪ মিলিমিটার, পুঞ্চায় ১০. ৮ মিলিমিটার, হুড়ায় ৬.৪, কাশিপুরে ৪.৪, পাড়াতে ১.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।