ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ঠিক দু সপ্তাহ আগের ঘটনা। খাস কলকাতার বাগবাজারের ১২ বছরের এক কিশোর তীব্র শ্বাসকষ্ট আর জ্বর নিয়ে বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়। সংশ্লিষ্ট ডাক্তারবাবু চিকিৎসার পাশাপাশি রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেন। তাঁর সন্দেহ সত্য হয়। কিশোর আক্রান্ত লেপ্টোস্পাইরোসিস রোগে। ইঁদুরের মূত্র কোনওভাবে পায়ে অথবা হাতে লাগলে এই রোগ অবধারিত! প্রথমে বাইপ্যাপ। পরে ভেন্টিলেশনে পাঠিয়ে শ্বাসকষ্ট কমেনি। একরকম বাধ্য হয়ে একমো-তে পাঠানো হয়। এগারোদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বাড়ি ফিরেছে কিশোর।
ঘটনা হল সবাই তো বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সামর্থ নেই। তাই রাজ্যে স্বাস্থ্যদপ্তর লেপ্টোস্পাইরোসিস এবং অতিক্ষুদ্র কিট অথবা পোকার কামড়ে স্ক্রাব টাইফাস থেকে রাজ্যের নাগরিকদের রক্ষার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করেছে। জরুরি ভিত্তিতে বাড়ানো হচ্ছে স্ক্রাব টাইফাস এবং লেপ্টোস্পাইরোসিস আক্রান্তদের টেস্টের জন্য নোডাল সেন্টারের সংখ্যা। যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, একটি নোডাল সেন্টার দিয়ে সামলানো সম্ভব হচ্ছে না। যার জেরে কলকাতার দু'টি হাসপাতাল যেমন এসএসকেএম এবং ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন-কে বেছে নেওয়া হয়েছে নোডাল সেন্টার হিসেবে। অপরদিকে উত্তরবঙ্গে পরিস্থিতির সামাল দিতে নোডাল সেন্টার করা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল-কে। নতুন ৩টি নোডাল সেন্টারের , নোডাল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে হাসপাতালের উপাধ্যক্ষদের।
চলতি অর্থবর্ষে নতুন তিনটি নোডাল সেন্টারে টেস্টিংয়ের জন্য আইজিএম অ্যালাইজা কিট কেনার জন্য বরাদ্দ হয়েছে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা। স্বাস্থ্য দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছে, এসএসকেএম হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনের জন্য ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জন্য বরাদ্দ হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা।
এই প্রসঙ্গে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. দেবদত্তা হালদার জানিয়েছেন, "২০২২ সাল ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের আওতায় সেন্টিনাল সেন্টার গঠন হয়। দুটি রোগ অত্যন্ত সংক্রমক প্রাণী থেকে সংক্রমণ ছড়ায়। যে কোনও বয়সের লোক আক্রান্ত হতে পারে। তাই ভয় না পেয়ে সতর্ক থাকতে হবে। উপসর্গ দেখা দিলেই হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।"