অর্ণব দাস, বারাসত: গত কয়েকমাস ধরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিক ঘটনায় গোটা বিশ্বের সমালোচনার কেন্দ্রে এখন বাংলাদেশ। বিশেষ করে হিন্দুদের উপর অত্যাচার মাত্রাছাড়া হয়ে চলেছে ইউনুস সরকারের আমলে। অবাধে ভাঙচুর চলছে মন্দির, উপাসনালয়ে। শুক্রবারও নেত্রকোনার এক মন্দিরে হামলার খবর মিলেছে। আর ওদিকে অত্যাচার যত বাড়ছে, এপারে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে আসার প্রবণতা বাড়ছে বাংলাদেশিদের মধ্যে। কিন্তু হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে এবার বারাসতের হোটেলগুলি প্রতিবেশীদের জন্য দরজা বন্ধ করল। মালিকরা বললেন, ''আগে দেশের সম্মান, পরে ব্যবসা।''
সীমান্ত লাগোয়া বনগাঁ, বসিরহাট পেরলেই বারাসত। চিকিৎসার জন্য সারা বছর ধরেই এখানে বাংলাদেশিদের যাতায়াত লেগে থাকে। এতদিন বারাসত স্টেশন লাগোয়া হোটেলগুলিই ছিল তাঁদের আশ্রয়স্থল। কয়েকদিনের জন্য এসব হোটেল বেছে নিতেন বাংলাদেশিরা। কিন্তু গত একমাস ধরে প্রতিবেশী দেশে পরিস্থিতি বদলেছে। লাগামছাড়া হিন্দু নির্যাতন শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ স্বরূপ বাংলাদেশিদের জন্য বারাসতের হোটেলগুলি দরজা বন্ধ করছে। শুক্রবার এনিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাল হোটেল কর্তৃপক্ষ।
এদিন সকালে বারাসতের বিভিন্ন গেস্ট হাউসগুলিতে বাংলাদেশিদের থাকতে না দেওয়ার আবেদন জানালেন সাধারণ মানুষজনই। এদিন বারাসাতের বেশ কয়েকটি বড় গেস্ট হাউসে গিয়ে তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেন, যাঁরা বাংলাদেশে হিন্দু ভাইবোনদের উপর অত্যাচার করছে, তাঁরা যদি কেউ ওদেশ থেকে এদেশে এসে থাকতে চান, তাঁদের কোনও গেস্ট হাউস ভাড়া দেবেন না।
বারাসতের এক গেস্ট হাউসের ম্যানেজার সমরজিৎ কর জানান, ''আগে দেশ, দেশের সম্মান, পরে ব্যবসা৷ তাতে যত ক্ষতি হয় হোক। আমরা একমাস ধরেই বাংলাদেশিদের আর হোটেলে থাকতে দিচ্ছি না। চিকিৎসার জন্য এখানে আসতেন অনেকে। কিন্তু আমরা তাঁদের এখন আর আশ্রয় দিচ্ছি না। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার আমরা পরিষেবা চালু করব।'' স্থানীয় বাসিন্দা পার্থবাবুর কথায়, ''বাংলাদেশে জেহাদের বীজ ছড়াচ্ছে শত্রুরা। তাই হোটেলগুলিকে বলেছি, তাঁদের কোনও জায়গা দেবেন না। ভারতের সুনাগরিক হিসেবে আমরা এটা বলছি। আমাদের প্রতিবাদ এটাই।'' এর আগে ত্রিপুরা এবং মালদহেও হোটেল কর্তৃপক্ষ সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশিদের জন্য 'নো এন্ট্রি' জারি করেছিল। এবার সেই তালিকায় যোগ হল বারাসত।