shono
Advertisement

‘দরজা ভেঙে ঢুকে টেনেহিঁচড়ে ঘুমন্ত মানুষটাকে নিয়ে গেল ওরা!’, ক্ষোভ ছত্রধরের স্ত্রীর

এত বড় সংকটের মাঝেও দৃঢ় ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তি মাহাতো।
Posted: 12:21 PM Mar 28, 2021Updated: 12:43 PM Mar 28, 2021

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই ঘটনা। শনিবার অসুস্থ হয়েছিলেন মা। হাসপাতালেও ভরতি হতে হয়েছিল। অসুস্থ, বৃদ্ধা মাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিলই। রাতটা কাটছিল ছেঁড়া ছেঁড়া ঘুমে। কিন্তু তাও কাটল না। শেষরাতে বাড়িতে হানা একসঙ্গে ৪০ জন এনআইএ আধিকারিকের। লালগড়ের আমলিয়া গ্রামের মাটির ঘরে নড়বড়ে কাঠের দরজায় সজোরে ধাক্কা। জওয়ানদের পোশাক পরা একদল লোকজন সোজা ঢুকে পড়লেন শোয়ার জায়গায়। প্রায় ধাক্কা দিয়ে ঘুমন্ত মানুষটিকে তুলে টেনেহিঁচড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে গেলেন তাঁরা। চলল চমকানো-ধমকানো। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে জাতীয় তদন্তকারী (NIA) আধিকারিকদের কাছ থেকে ঠিক এই আচরণই পেলেন ছত্রধর মাহাতো। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তাঁর স্ত্রী নিয়তি মাহাতো।

Advertisement

শনিবার জঙ্গলমহলে ভোট ছিল। অসুস্থ মাকে হাসপাতালে ভরতি করিয়ে ছেলে, স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় ১০ বছর পর ভোটের লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন বর্তমানে তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো। নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে আঙুলে কালিও লাগিয়েছেন। তখনও কি জানতেন রাতে এমন একটা মুহূর্তের মুখোমুখি হবেন? স্ত্রী বলছেন, ”জানি না কেন ওরা হঠাৎ এসে এভাবে নিয়ে গেল। কোনও কাগজপত্র সঙ্গে ছিল না। কেন নিয়ে যাচ্ছে, তাও আমাদের বলেনি। উনি বারবার জানতে চেয়েছিলেন, কী এমন করেছেন যে এভাবে নিয়ে যেতে হবে? অফিসার বললেন, এখন এসব বলার সময় নেই। যেতে হবে সঙ্গে।”

[আরও পড়ুন: প্রচারে মুখোমুখি সেলিম-যশ, বিজেপির তারকা প্রার্থীর সঙ্গে ছবি তুলতেই ব্যস্ত সিপিএম কর্মীরা!]

নিয়তিদেবী জানান, ”তখন রাত প্রায় সাড়ে তিনটে হবে। প্রায় ৪০ জন মতো হবে অফিসার, কেউ গাড়িতে, কেউ হেঁটে প্রথমে গ্রামের বাইরে আমাদের নতুন বাড়িতে যায়। ওখানে বড় ছেলে ঘুমিয়েছিল। ওকে ডেকে তুলে সঙ্গে নিয়ে আমাদের গ্রামের বাড়িতে আসে। এমনিতেই এই বাড়ির দরজা নড়বড়ে। লাথি মারলেই খুলে যায়। ওরা লাথি মেরে দরজা খোলার পর সোজা শোওয়ার জায়গায় চলে আসে। উনি ঘুমোচ্ছিলেন। ঘুম ভেঙেই দেখেন, এত লোক দাঁড়িয়ে। ওরা বলে যে এখনই ওদের সঙ্গে যেতে হবে। কথা আছে। উনি জানতে চান, কী কথা। ওরা জানায়, এখানে কথা বলা যাবে না। তারপর প্রায় টেনেহিঁচড়ে বারান্দায় নিয়ে যায়। উনি বারবার জানতে চান, ব্যাপার কী। ওরা বলে, এক মিনিটও সময় নেই, সঙ্গে যেতে হবে। তারপর জোর করে নিয়ে যায়।”

[আরও পড়ুন: অস্ত্রের ঘায়ে আহত তৃণমূল নেতার মেয়ে, বিজেপির বিরুদ্ধে নরেন্দ্রপুর থানায় বিক্ষোভ]

NIA আধিকারিকদের সঙ্গে কি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল? এই প্রশ্নের উত্তরে ছত্রধরের স্ত্রী জানালেন, কোনও কাগজপত্র ছিল না। কেন এভাবে গ্রেপ্তার করা হল ছত্রধরকে, সে বিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে তাঁরা। বিপদের সময় ফোন করেছেন ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিনহাকে। তিনি আপাতত আইনিভাবে মোকাবিলা করছেন। তবে গ্রেপ্তারির নামে তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করা হল, তা কিছুতেই ভুলতে  পারছেন না স্ত্রী নিয়তিদেবী। 

ছবি ও ভিডিও: প্রতীম মৈত্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement