শেখর চন্দ্র, আসানসোল: উৎসবের আবহে রক্তাক্ত হয়েছিল আসানসোলের (Asansol) মাটি। রামনবমীর মিছিলে ঝামেলার জেরে খুন হন তরতাজা যুবক। বছর ছয়েক আগের সেই ঘটনার পর তপ্ত আসানসোলকে শান্তির বার্তা শুনিয়ে নজর কেড়েছিলেন নিহত যুবকের বাবা ইমাম রশিদি (Imam Rashidi)। ইদের দিনেও শান্তি, সম্প্রীতির বার্তাই দিলেন সন্তানহারা বাবা।
২০১৮ সালের রামনবমীর (Ramnavami)দিন আসানসোলের রানিগঞ্জ এলাকায় মিছিল চলাকালীন সামান্য ঝামেলা থেকে খুনোখুনির মতো গুরুতর ঘটনা ঘটে যায়। নিহত হন ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদির ছেলে। সাম্প্রদায়িক আগুনে জ্বলে ওঠে এলাকা। তখন ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদির বুকে সন্তান হারানোর যন্ত্রণা। তা সত্ত্বেও উত্তাপ প্রশমিত করতে আসরে নামেন স্বয়ং ইমাম। হাতজোড় করে সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। বার্তা দেন, আইন আইনের পথে চলুক। কেউ কোনও অশান্তি যেন না ছড়ান। পালটা অশান্তিতে তাঁর মতো আর কোনও বাবার কোল যেন খালি না হয়। তাঁর এই বার্তায় ধীরে ধীরে শান্ত হতে থাকে রানিগঞ্জ।
[আরও পড়ুন: অ্যাডিডাসের জুতো পরে বিপাকে ঋষি সুনাক, চাপের মুখে ক্ষমাপ্রার্থী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী]
সন্তানশোক বুকে নিয়েও কীভাবে এমন সম্প্রীতির বার্তা তিনি দিলেন, তা ভেবে অনেকেই সেসময় বিস্মিত হয়েছিলেন। শুধু এটাই নয়, এর পরবর্তী সময়ে বাংলার যে কোনও প্রান্তেই সাম্প্রদায়িক অশান্তি সামান্য উসকে উঠলেই শান্তির বার্তা শোনা গিয়েছে ইমাম ইমদাদুল্লা রশিদির গলায়। বারবারই তিনি আইনের উপর ভরসা রাখার কথা শুনিয়েছেন। এবার ইদেও সেই একইরকম শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা রশিদির। তাঁর কথায়, "রমজান মাস আমাদের ত্যাগ শেখায়। খিদের জ্বালা যে সকলের সমান তারই শিক্ষা দেয় রমজান। গরিব, ধনী সকলেই যে সমান, তা বুঝতে সাহায্য করে রোজা। তাই ইদের দিন সকলকে দানধ্যান করতে হয়। শান্তি, সম্প্রীতি বজায় থাক। রাজ্যে কর্মসংস্থান হোক, সেটাই চাইব।" সন্তান হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। তবে মুখে প্রকাশ করলেন না তিনি।
দেখুন ভিডিও: