অর্ক দে, বর্ধমান: ছেলে বরাবর পড়াশোনা করতে ভালবাসত। আর তাই ছেলেকে নিয়ে বরাবর আশা ছিল কৃষিজীবী পরিবারের। এমনকী নিজের দোকানও বিক্রি করে দিয়েছিলেন ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুতে (Jadavpur University Student Death) সেই ছেলেই এখন পুলিশের হাতে ধৃত। খবর পেয়ে বর্ধমানের মেমারির ছাত্রের পরিবারের দাবি, ছেলে নির্দোষ, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুতে শুক্রবার আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারির সংখ্যা ১২। গতকালকের ধৃতদের মধ্যে ২ জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। তাঁদেরই একজন মেমারির (Memari) নাসিম আখতার। মেমারি ২ নং ব্লকের বড়ারি গ্রামের নাসিম বর্ধমানের সপ্তপল্লি শিক্ষা নিকেতনে পড়াশোনা করেছেন। তারপর সোজা কলকাতায় (Kolkata) এসে মেধার জোরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন (Chemistry) বিভাগে ভরতি হন।
[আরও পড়ুন: ‘একটু কমিয়ে দিতে বলুন না’, মহিলার আবেদনে অবাক ফিরহাদ]
বাড়িতে মা, বাবা, বোন রয়েছে নাসিমের। বাবা নাসির হায়দার মূলত কৃষক (Farmer)। তাঁর একটি ছোট দোকান ছিল। কিন্তু ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য দোকান বিক্রি করে দেন। ছেলেও ভাল ফলাফলই করেছিল। কিন্তু তারপরই ঘনাল বিপদ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু, র্যাগিং (Ragginf) যোগ – এসবের জেরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় নাসিম। কিন্তু পরিবারের দাবি, ছেলে নির্দোষ। এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতেই পারে না। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। অবাক প্রতিবেশীরাও। শেখ বসিরউদ্দিন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, নাসিমের ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় ঝোঁক ছিল। বাড়িরও খুব আশা ছিল তাকে নিয়ে। এ বছরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বেরিয়েছে। কিন্তু হস্টেলে থাকত উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতির জন্য। এরই মধ্যে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টিতে হতবাক সকলেই।
এ প্রসঙ্গে তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষক শামিম রহমান বলেন, “ওকে যেমনটা দেখেছি, শুধু মেধাবীই নয়, খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে। স্কুলের অন্যান্য কাজেও খুব সক্রিয় ছিল। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে আমার ছাত্র নাসিম এসবের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ নিশ্চই তদন্ত করছে। আমি বলতে চাই, সঠিক তদন্ত হোক। দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু নির্দোষ যেন শাস্তি না পায়।”
