শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বিপজ্জনক বাড়ি হিসেবে আগেই নোটিস দিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু তারপরেও বাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে কোনও তাপ-উত্তাপ ছিল না। এবার সেই বাড়ি ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করল জলপাইগুড়ি পুরসভা। জায়গা হারিয়ে ব্যবসায়ীদের এখন মাথায় হাত।
জলপাইগুড়ি শহরের থানা মোড় এলাকায় একশো বছরের পুরনো ওই বাড়ি প্রায় ১৬ কাঠা জমির উপর গড়ে উঠেছিল। দোতলা ওই বাড়িটি ব্যবসায়িকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। বাড়িটির উপরে ও নিচে একাধিক দোকান ছিল। উপরের অংশ অনেকটাই ভগ্নপ্রায় হয়ে যাওয়ায় উপরের অংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। একতলায় ১৬টি দোকান চালু ছিল। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িটি বেশ কয়েক বছর আগে তিন জন মিলে কিনেছিলেন। সেই মালিকদেরও এই বিপজ্জনক বাড়ি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করা হয়। পুরসভার আধিকারিকরা অনেক বার ওই বাড়ি খালি করতে বলেছিলেন। তারপরও কারোর তরফ থেকে বাড়ি সারানো বা ফাঁকা করার জন্য কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। বাড়িটির দেওয়ালে একাধিক বড় বড় গাছ। দেওয়ালেও ছিল একাধিক ফাটল।
যে কোনও মুহূর্তে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। সেই আশঙ্কাতেই এবার পদক্ষেপ করল পুলিশ-প্রশাসন। শুক্রবার সকালে ওই এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য আধিকারিকও উপস্থিত ছিলেন। দোকানের মালিকদের সরে যেতে বলা হয়। কিছু ব্যবসায়ী তাঁদের কিছু জিনিসপত্র বার করে নিয়ে যান। এরপর শুরু হয় বাড়ি ভাঙা। পে লোডার দিয়ে বাড়ির সামনের অংশ ভাঙা হতে থাকে।
এদিনের বাড়ি ভাঙার ঘটনায় ব্যবসায়ীরা যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। অনেকের চোখেই জল। অনেকেই সব জিনিসপত্র বার করতে পারেননি। এরপর কোথায় তারা যাবেন? তাই নিয়েও ব্যবসায়ীরা দুশ্চিন্তায়। আর্থিক বড় ধাক্কা তাঁদের উপর এল। সেই কথাও বলা হচ্ছে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা আগেই বাড়িটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বিপজ্জনক ঘোষণা করেছিলেন। তারপরেই তড়িঘড়ি বৈঠক করে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। গোটা বাড়িটিই দ্রুত ভেঙে ফেলা হবে। এমনই জানিয়েছেন, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়।