ধীমান রায়, কাটোয়া: গুলি চালিয়ে লুটপাটের পর পোষ্য সারমেয়কে অপহরণ! পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া থানার পুইনি গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য। শুক্রবার রাতে এক জ্যোতিষীর বাড়িতে হানা দেয় সশস্ত্র ডাকাতদল। গুলি চালিয়ে বাড়ি থেকে লুট করে নিয়ে যায় ৭ ভরি সোনা, ৩৫ ভরি রূপোর গয়না-সহ নগদ কিছু টাকা। ভোজালির কোপে জখম পরিবারের যুবক। লুটপাট শেষে বাড়ির পোষা কুকুরকেও অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়েই কাটোয়া-সহ আশপাশের থানা এলাকার আইসি, ওসিরা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই এলাকায় যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুইনি গ্রামের বাসিন্দা নিবাস দাস পেশায় জ্যোতিষী। তাঁর বাড়ি ছিল কাটোয়ার ঘোড়ানাস গ্রামে। প্রায় ২৫ বছর আগে বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ি পুইনি গ্রামে বসবাস শুরু করেন। বাড়ির পাশেই তাদের মন্দির। ওই মন্দির চত্বরে বসেই তিনি জ্যোতিষ চর্চা করেন। নিবাবাবুর বাড়িতে রয়েছেন শাশুড়ি খুকুদেবী, স্ত্রী, এক ছেলে এবং এক মেয়ে। ছেলে রাকেশ এবং মেয়ে প্রতিমা দুজনেই পড়াশোনা করেন। স্ত্রী চায়নাদেবী গৃহবধূ। শুক্রবার নিবাসবাবু তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে জয়রামবাটি বেড়াতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন খুকুদেবী এবং তাঁর এক দিদি সীমাদেবী ও রাকেশ। নিবাসবাবুদের বাড়িতে একটি পোষা দেশি কুকুর ছিল। রাকেশ জানিয়েছেন, প্রতিদিন রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে পোষা কুকুরটিকে খাওয়ানোর পর একবার বাইরে কুকুরটিকে নিয়ে যাওয়া হয় শৌচকর্ম করানোর জন্য।
গৃহস্থের ঘর তছনছ করে লুটপাট
শুক্রবার তখন রাত প্রায় পৌনে এগারোটা। রাকেশ সদর দরজা খুলে সবে কুকুরটিকে নিয়ে বেরিয়েছেন, তখনই ৬-৭ জনের দুষ্কৃতীদল তাকে ঘিরে ধরে। ভোজালি, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে যায়। তারপর লুটপাট চালাতে থাকে। রাকেশ জানান, ওইসময় আলমারি ভেঙে গয়না লুটপাটের পাশাপাশি দুস্কৃতীরা বলতে থাকে 'কোথায় টাকাগুলো রাখা আছে বের কর।' রাকেশ জানান, ওইসময় একজন গুলি চালায়। তবে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় গুলি। এরপর রাকেশ নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে ভোজালির কোপ লাগে হাতে। দুষ্কৃতীরা বেশ কিছুক্ষণ লুটপাট চালানোর পর চলে যায়। এরপর পরিবারের লোকজন প্রতিবেশীদের জানায়। লোকজন আসার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ চলে আসে ঘটনাস্থলে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞ দল আসতে পারে।