জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ : সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার বদলে দিতে হবে মোটা টাকা। ১২ লক্ষ টাকা খসালে মিলবে সেচ দপ্তরের চাকরি। বনগাঁয় খোদ সরকারি কর্মীরা এই চক্র চালাচ্ছিলেন। সেই চক্রের হদিশ পেল পুলিশ। গ্রেপ্তার হলেন সরকারি আধিকারিক, কর্মীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গত জুলাই মাসে বনগাঁর রাওতারা এলাকার বাসিন্দা আবদুল হাই মণ্ডল বনগাঁ থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, ২০১৯ সালে সেচ দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে মোহর আলি মণ্ডল, অভিজিৎ মণ্ডল ও সম্রাট চন্দ্র তাঁর কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা নেন। দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও চাকরি পাননি তিনি। আধিকারিকদের চাপ দিতে তাঁরা এক সময় চাকরির কাগজপত্র দেন। সেই নিয়ে আবদুল হাই মণ্ডল সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়েছিলেন। তখন জানা যায়, ওই কাগজপত্র আদপে ভুয়ো। বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপর তিনি বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
বেশ কয়েক মাস ধরেই পুলিশ তাঁদের খোঁজ করছিল। তথ্যতালাশও চলছে থাকে। পুলিশ মোহর আলি মণ্ডলকে বাগদা থেকে গ্রেফতার করে। তাঁর দেওয়া সূত্র ধরেই সোমবার রাতে বিশ্বজিৎ মণ্ডলকে অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্রাট চন্দ্রকে হাবরার বানীপুর থেকে পাকড়াও করে বনগাঁ থানার পুলিশ। ধৃতদের আজ মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনায় এলাকায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সরকারি দপ্তরের কর্মীরা এভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে? চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। সব থেকে বড় কথা একজন আধিকারিক এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। কত জনের সঙ্গে এই প্রতারণা হয়েছে? কত টাকা তোলা হয়েছে বাজার থেকে? সেইসব বিষয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতদের ধারাবাহিক জেরা প্রয়োজন। সেই কথাও জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কেবল কি এই তিনজন? নাকি আরও অনেকে এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে? সেইসবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।