shono
Advertisement
Hooghly’s Baroma

৫০০ বছর ধরে পূজিত, বয়সের ভারে দাঁত পড়েছে হুগলির বড়মার!

Kali Puja 2025: স্বপ্নাদেশে দেখা পেয়েছিলেন তান্ত্রিক।
Published By: Suhrid DasPosted: 06:22 PM Oct 15, 2025Updated: 07:27 PM Oct 15, 2025

সুমন করাতি, হুগলি: উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বড়মার খ্যাতি ছড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে বাংলা ছাড়িয়ে ভিনরাজ্যেও। হুগলির উত্তরপাড়াতেও রয়েছেন আরেক বড়মা। আনুমানিক ৫০০ বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছেন এখানকার 'বড়মা' কালী। এই বড়মা-কে ঘিরেও চর্চিত রয়েছে নানা আশ্চর্য কাহিনি। জাগ্রত এই কালীপ্রতিমা দর্শনে পুজোর সময় দূরদূরান্ত থেকে ভিড় করেন বহু ভক্ত। মনস্কামনার জন্য করা হয় মানতও। স্থায়ী মন্দিরে হয় দেবীর পুজো।

Advertisement

উত্তরপাড়ার বৈঁচিগ্রামে আনুমানিক পাঁচ শতক ধরে পুজো হচ্ছে এই বড়মার। এমনই দাবি স্থানীয়দের। প্রতিমার উচ্চতা ২২ ফুট। লক্ষ্মীপুজোর দিন থেকে শুরু হয় দেবীর কাঠামো পুজো। এরপর শুরু হয় নতুন মূর্তি গড়ার কাজ। আগে অন্য মৃৎশিল্পী এই মূর্তি তৈরি করতেন। গত ১৭ বছর ধরে বড়মার মূর্তি তৈরি করছেন শিল্পী রমেশ হাজরা। শিল্পী বলেন, "প্রতি বছর শাল কাঠ দিয়ে মূর্তির কাঠামো তৈরি হয়। এরপর তিনদিন ধরে চলে কাঠামোর উপর খড় বাঁধার কাজ। সেই কাজ শেষ হলে শুরু হয় মাটি লেপা।" মাটির কাজ আগে শেষ হলেও কোনও রঙের ছোয়া পড়ে না মূর্তির গায়ে। কালীপুজোর দিন সকালে প্রতিমা রং করা হয়। ভুষোকালি, নীলের ডেলা ও গদের আঠা দিয়ে তৈরি হয় রং। ক্রমে দেবীর মূর্তি হয়ে ওঠে নিকশ কালো। রক্তজবার মতো লাল ভ্রু। টানা বড় বড় সাদা মণির মধ্যে দুই কালো চোখ। রক্তবর্ণা জীবের উপরে অংশে দেখা যাচ্ছে সাদা দাঁত।

সারা বছর পূজিত হয় এই মূর্তি। নিজস্ব চিত্র

দেবীর মুখমণ্ডলেও রয়েছে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। বড়মার সামনের দিকের একটি দাঁতের অংশের রং কালো রাখা হয়। কিন্তু এই বিশেষ কারণ কী? স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, বড়মার বয়স হয়েছে। ফলে সামনের ওই দাঁতটি পড়েছে। দেড় কাহন খড়, ৩০ বস্তা এঁটেল মাটি ও ১৫ বস্তা গঙ্গামাটিতে তৈরি হয় মূর্তি। দেবীর ডান পা থাকে মহাদেবের বুকের উপর। কালীপুজোর দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে বড়মা-কে সাজানো। মধ্যরাতে শুরু হয় পুজো, চলে নিশিভোর পর্যন্ত। এখানে দক্ষিণা কালীরূপে পূজিত হন বড়মা। সেই পুজো দেখার জন্য হাজির হয় প্রচুর ভক্ত, সাধারণ মানুষ।

কীভাবে এই পুজো শুরু হল? তাই নিয়েও এক কাহিনি রয়েছে বলে খবর। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একসময় মন্দিরের পাশ দিয়ে কোনও একটি নদী বয়ে গিয়েছিল। নদীর পাশেই ছিল শ্মশান। কথিত আছে, ওই নদীর পাড়েই এক তান্ত্রিক তন্ত্র সাধনা করতেন। তিনিই স্বপ্নাদেশে নদীর জলে বড়মা-র একটি শিলামূর্তি পেয়েছিলেন। তারপর ওই তান্ত্রিকই বিশাল এক মাটির কালীমূর্তি তৈরি করেছিলেন। শুরু হয় কালীপুজো। তারপর বহু সময়ে পেরিয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বড়মার ওই শিলামূর্তি এখন গ্রামের দক্ষিণপাড়ার এক ব্রাহ্মণের পরিবারে থাকে। সেখানেই চলে নিত্যপুজো। কালীপুজোর সময় ওই শিলামূর্তি ওই মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। দেবীর মন্দিরেই রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন। সেখানেই ব্রাহ্মণ পুজোয় বসেন। আগে ওই মন্দির ছিল টালির চালের। পরে গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় তৈরি হয় বিশাল মন্দির। পরবর্তী সময়ে বড়মা কালী বারোয়ারি পুজো কমিটি গঠিত হয়। প্রতি বছর ভাইফোঁটার দিন বড়মার বিসর্জন হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বড়মার খ্যাতি ছড়িয়ে বাংলার পাশাপাশি ভিনরাজ্যে।
  • হুগলির উত্তরপাড়াতেও রয়েছে আরেক বড়মা।
  • আনুমানিক ৫০০ বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছেন 'বড়মা' কালী।
Advertisement