বাবুল হক, মালদহ: বিহার (Bihar) থেকে বাংলায় ঢুকে তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা। মালদহের ইংরেজবাজারে লোহার গ্রিল ভেঙে কালীমন্দিরে ঢুকে একাংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে দুষ্কৃতীর দল পালিয়ে গেলেও একজন ধরা পড়ে যায়। খবর পেয়ে তদন্তে নামে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত দুষ্কৃতী বিহার যোগের কথা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের। জানিয়েছে, তারা মালদহে তাণ্ডব চালানোর পরিকল্পনা করেছে। সেইমতোই কালীমন্দিরের হামলা করা হয়েছে। বাকি দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি জারি রেখেছে পুলিশ। এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনকে নিশানা করেছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। সোশাল মিডিয়ায় তিনি এনিয়ে সরব হয়েছেন।
বহিরাগত দুষ্কৃতীরা যে বাংলায় ঢুকে হিংসা ছড়ানোর পরিকল্পনা করছে – এনিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল রাজ্য প্রশাসন। আর ঠিক রাজ্য প্রশাসনের এই আশঙ্কা অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেল। মঙ্গলবার মাঝরাতে দুষ্কৃতীদের কালীমন্দিরের (Kali Temple) তাণ্ডব চালানোর ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণনগর গ্রামে। ইতিমধ্যে দুষ্কৃতীদের এই তাণ্ডবের ঘটনাটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল (Viral) হয়েছে। সেখানে এক দুষ্কৃতী পুলিশের জেরায় বিহারের কিষাণগঞ্জ থেকে এসে মালদহে গোলমাল পাকানোর কথাও জানিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুষ্কৃতী একেক সময় একেক রকম নাম বলছে। তবে ধৃত যে বিহারের কিষাণগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: কুণালের বাড়িতে হামলার চেষ্টা, তৃণমূলের পালটা প্রতিরোধে পালাল বিজেপি]
এদিন মধ্যরাতে চার থেকে পাঁচজনের দুষ্কৃতী দল ইংরেজবাজারের কৃষ্ণনগর গ্রামের একটি কালীমন্দিরে লোহার গ্রিল ভাঙে। এর পর ওই মন্দিরের পুজোর সামগ্রী এবং প্রতিমায় আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এলাকার এক নৈশপ্রহরী বিষয়টি দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে দেন। গ্রামবাসীরা হইচই করে দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করে। তখনই একজন দুষ্কৃতী গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ে যায়। চলে উত্তম মধ্যম মার। এই ঘটনার খবর পেয়ে ইংরেজবাজার থানার অন্তর্গত মিলকি ফাঁড়ির পুলিশ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে বিভ্রান্ত করতেই আটক ওই দুষ্কৃতী নিজের নাম ভুলভাল বলছে। তবে ধৃতের বাড়ি বিহারের কিষাণগঞ্জ এলাকায়। এই ঘটনার সঙ্গে আরও চার থেকে পাঁচজন দুষ্কৃতী ছিল বলেও গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। সেই দুষ্কৃতীদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে সিধু-যুবরাজ! লোকসভার আগে পাঞ্জাবের গেরুয়া শিবিরে জোড়া সুখবর]
পুরো ঘটনাটি নিয়ে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে অনুমান করছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি জানিয়েছেন, রাজ্য প্রশাসন আগেই অনুমান করেছিল যে বাইরে দুষ্কৃতীরা বাংলায় এসে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তা এদিন আবারও প্রমাণ মিলে গিয়েছে। সম্প্রীতির ঐক্য বাংলায় গোলমাল পাকিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক দল নষ্ট করতে চাইছে। এটা আমরা কখনওই হতে দিব না। আজকের এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পুলিশের কাছে দাবী করেছি ঘটনার সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করা হোক।