সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘ঘাঘর ঘেরা’ কর্মসূচিতে প্রশাসনের হুমকির প্রতিবাদে চলতি মাসের ২৬ এপ্রিল জঙ্গলমহলে বন্ধ (Bandh) ডাকল কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ। জঙ্গলমহলের চার জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৪ ঘন্টা বন্ধ ডেকেছে কুড়মিদের (Kurmi) ওই সংগঠন। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘হুড়কা জ্যাম’। তবে এই বন্ধ ঘিরে কুড়মি সংগঠনে বিভাজন দেখা দিয়েছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজ অর্থাৎ পুরুলিয়ার যে সংগঠনটি নিজেদের অধিকার আদায়ের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তারা এই বন্ধ নিয়ে কোনও কথা বলতে চায়নি। কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ-র রাজ্য কমিটির সভাপতি রাজেশ মাহাতো বলেন, “জঙ্গলমহলের চার জেলায় ২৬ এপ্রিল কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এই বন্ধে স্তব্ধ হবে জঙ্গলমহল।”
কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ঘাঘর ঘেরা’ কর্মসূচিতে ঐতিহাসিক কুড়মি সমাজ আন্দোলনের নেতৃত্বদের প্রশাসনিক হুমকি ও অপমানের বিরুদ্ধে ও আদিবাসী কুড়মি জনজাতির প্রতি দীর্ঘ ৭৩ বছর ধরে সরকারের সাংবিধানিক বঞ্চনা, লাঞ্ছনা ও অবহেলার প্রতিবাদে এই বন্ধ। তাছাড়া কুড়মি জনজাতিকে আদিবাসী (ST) তালিকাভুক্ত করার দাবিও রয়েছে তাদের।
[আরও পড়ুন: গরমে বিশ্ব রেকর্ড বাংলার! পৃথিবীর সপ্তম উষ্ণতম শহর বাঁকুড়া]
এই দাবিতেই গত ৫ এপ্রিল থেকে তারা পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে রেল ও সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পাঁচ দিনের মাথায় অবরোধ তুলে নেওয়ার পর তারা রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনায় নবান্নে যান। কিন্তু আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় তাদের এই নয়া কর্মসূচি বলে জানা গিয়েছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা (প্রধান নেতা) অজিতপ্রসাদ মাহাতো বলেন, “এই কর্মসূচি নিয়ে আমরা কিছু বলব না।”
[আরও পড়ুন: মোবাইলে লুকিয়ে নিয়োগ দুর্নীতির তথ্য, খুঁজতে ফরেন্সিক ল্যাবে জীবনকৃষ্ণর ফোন পাঠাচ্ছে CBI]
নিজেদের মধ্যে আন্দোলন নিয়ে বিভাজনের মাঝে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দলের তীব্র বিরোধিতা করেছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। তারা কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেবে না বলে জানিয়েছে। শাসকদল-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির উপর নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে চাপ সৃষ্টি করতেই ওই সামাজিক সংগঠনের এই কৌশল বলে জেলার রাজনৈতিক মহলের অভিমত।