shono
Advertisement
Flood

লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর, রাস্তায় ধস, ভাঙল নদীর বাঁধ

তিস্তা থেকে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে কালিম্পং এবং পানবু সড়কেও।
Published By: Paramita PaulPosted: 03:14 PM Jul 02, 2024Updated: 03:22 PM Jul 02, 2024

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য ও অরূপ বসাক: লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর। পাহাড়ি জেলাগুলিতে নামছে ধস। ভাঙছে সেতু। রাস্তার উপর দিয়ে বইছে নদী। প্লাবিত তিস্তা বাজার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। তথৈবচ দশা ডুয়ার্সেরও। রাতভর বৃষ্টিতে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত মাল বাজার এলাকা। বিপর্যস্ত জনজীবন।

Advertisement

ভারী থেকে অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের জেরে বিপর্যস্ত উত্তরের পাহাড়-সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকা। ধস নেমে মিরিক বাইপাস রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। জোরবাংলো থেকে তিস্তা রোডে ৩-মাইল থেকে ৬-মাইলের মধ্যে ভূমিধসের খবর মিলেছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ আছে। তিস্তা থেকে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে কালিম্পং এবং পানবু সড়কেও। এদিকে বাঁধ ভেঙে লিস নদীর জল প্লাবিত করেছে বাগরাকোটের বিস্তীর্ণ এলাকা। উত্তর সিকিমের মংশেলায় চারটি বাড়ি ভূমিধসে তলিয়েছে। আরও বারোটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

[আরও পড়ুন: নিটে ৭২০-তে ৭২০, রি-টেস্টে ফুল মার্কস ছুঁতে পারলেন না ৫ টপারের কেউই]

পাহাড়ে অতিবর্ষণের জেরে সমতলে তিস্তা, জলঢাকা সহ প্রতিটি নদীর জলস্তর বেড়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত গজলডোবার তিস্তা ব্যারাজ থেকে প্রতি ঘন্টায় ৩ হাজার ২০০ কিউমেক জল ছাড়া হয়েছে। এর ফলে সমতলে নদী উত্তাল হয়েছে। সেচ দপ্তরের তরফে দোমহানি এলাকায় তিস্তায় 'হলুদ' সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জ এলাকায় তিস্তা বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এখানে 'লাল' সতর্কতা জারি হয়েছে। অন্যদিকে জলঢাকা নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।

আবহাওয়া দপ্তরের তরফে আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তরের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের 'লাল' সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এখানে ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবার দুপুরের প্রকাশিত বুলেটিনে আবহাওয়া দপ্তরের তরফে অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের জেরে পাহাড়ে ভূমিধস এবং সমতলে হড়পা বানের বিপদের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, "আগামী ২৪ ঘন্টায় পাহাড়-সমতলে ভারী থেকে অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরের পাচ জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে হড়পা বান ও ভূমিধসের বিপদ দেখা দিতে পারে।" আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সেবকে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৮৭ মিলিমিটার। এছাড়াও আলিপুরদুয়ারে ২১৩ মিলিমিটার, মাথাভাঙ্গায় ১৬২ মিলিমিটার, কোচবিহারে ১২৬ মিলিমিটার, দার্জিলিং ও ফালাকাটায় ১২৩ মিলিমিটার, গজলডোবায় ১২২ মিলিমিটার এবং বারোবিসায় ১২১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ে অতিভারী বর্ষণের জেরে মিরিক বাইপাস সড়কে ধস নেমে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়েছে।মহেন্দ্রগাঁও যাওয়ার পথে ওই ধসের জন্য ভোগান্তি বেড়েছে। স্থানীয়রা রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য চেষ্টা করছে। জোরবাংলো থেকে তিস্তা রোডে ৩ মাইল থেকে ৬ মাইলের মধ্যে ভূমিধসের খবর মিলেছে। এই রুটেও যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ আছে। এর জেরে এমনিতেই ভোগান্তি চরমে। তার উপর মঙ্গলবার বন্ধ হল একাধিক রাস্তা।

[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলা: ইডিকে ৭০ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে চান ঋতুপর্ণা!]

প্রশাসন সূত্রের খবর, ধসের জেরে এদিন তিস্তা থেকে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে কালিম্পং এবং পানবু সড়কে। গোরুবাথান থেকে মংপং সড়কের পরিস্থিতিও খারাপ। যে কোনও সময় রাস্তাটি বন্ধ হতে পারে। বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে লিকুভির, গেইলখোলা, বিড়িকদাড়া, ২৭ মাইল, ২৯ মাইল, মিরিক, ৬ মাইল সহ একাধিক জায়গা। সমতলে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জনপদ জলে তলিয়েছে। মহানন্দা, তিস্তা, বালাসন, করলা, জলঢাকা, তোর্সা-সহ প্রতিটি পাহাড়ি নদীর জলস্তর বেড়েছে। সোমবার দার্জিলিং পাহাড়ের ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কে কার্শিয়াং থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে মহানদী এলাকায় ভূমিধস নামে। গোটা রাস্তা কাদায় ডুবে বিপজ্জনক হয়েছে। এখানে পাঁচটি বাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে সুকনা হয়ে কার্শিয়াং ও দার্জিলিং যাতায়াতের পথে জাতীয় সড়কেও ভূমিধস নেমেছে। মিরিক সোরেনি চা বাগান কমিউনিটি হল সংলগ্ন এলাকা ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয়েছে। ৬ মাইলে তাগদা রোডের রামপুরিয়স বস্তি ভূমিধসে বিধ্বস্ত হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ভারী থেকে অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের জেরে বিপর্যস্ত উত্তরের পাহাড়-সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকা।
  • ধস নেমে মিরিক বাইপাস রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে।
  • জোরবাংলো থেকে তিস্তা রোডে ৩-মাইল থেকে ৬-মাইলের মধ্যে ভূমিধসের খবর মিলেছে।
Advertisement