নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বীরভূমের রামপুরহাটের জঙ্গলে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক। জঙ্গলের ভিতর থাকা পুরনো পরিত্যক্ত একটি ঘরে ওই বিস্ফোরক মজুত ছিল। মঙ্গলবার সকালে জেলা এনফোর্সমেন্টের বিশাল বড় দল সেখানে হানা দেয়। ২০ হাজার ডিটোনেটর ও ১৫ হাজার জিলেটিন স্টিক উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। কী কারণে ওই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত করা ছিল? বাংলায় কি তাহলে কোনও নাশকতার ছক কষা হচ্ছে? সেই প্রশ্নও উঠছে।
এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের কাছে গোপন খবর গিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এদিন সকালে বিশাল ফোর্স নিয়ে রামপুরহাটের হস্তিকাদা এলাকার ওই বনের ভিতর ঢোকা হয়। বনের বেশ কিছুটা ভিতরে একটি ছোট পরিত্যক্ত ঘর দেখতে পাওয়া যায়। সেই ঘরের ভিতর ঢুকতেই হতবাক হন আধিকারিকরা। থরে থরে পেটি সাজানো ছিল সেখানে। সেইসব পেটি খুলতেই চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। পেটির ভিতর থেকে বেরিয়ে পড়ে ডিটোনেটর ও জিলেটিন স্টিক। জানা গিয়েছে, এদিন মোট ২২টি রোল জিলেটিন স্টিক ও ৬ বাক্স ডিটোনেটর উদ্ধার হল।
কেন ওই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সেখানে মজুত করা ছিল? এর সঙ্গে কি নাশকতার কোনও ছক রয়েছে? সেই প্রশ্ন উঠেছে। ওই জঙ্গল পেরোলেই প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড। সেখানে কি ওই বিস্ফোরক পাচার করা হয়? নাকি সেখান থেকেই ওই সব আনা হয়েছে? রামপুরহাটে একাধিক পাথরখাদান আছে। বেআইনিভাবে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অনেক জায়গায় অবৈধভাবে পাথর কাটার অভিযোগও সামনে আসে। ওইসব ডিটোনেটর ও জিলেটিন স্টিক সেই কাজে ব্যবহারের জন্য বিক্রি হত বলে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। কিন্তু কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত? কোথা থেকে ওই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এল? সেসব জানার চেষ্টা চলছে।
ওই ঘরের দেওয়ালে কালি দিয়ে সাধন কুড়ে, ভজন কুড়ে, দুটি নাম লেখা আছে। তাঁরা কারা? এই বিস্ফোরকের সঙ্গে কি তাঁরা কোনওভাবে জড়িত? তদন্তে আরও বেশ কিছু নাম সামনে এসেছে। তাঁদের খোঁজও শুরু হয়েছে। সেখান থেকে বিস্ফোরক ঝাড়খণ্ড হয়ে মুর্শিদাবাদে যায় বলেও জানা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ থেকে বিস্ফোরক বাংলাদেশে যাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। ডিএসপি-ডিইবি স্বপন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের তরফ থেকে ওই খবর দেওয়া হয়েছিল। তারপরই আঁটঘাট বেঁধে ওই জঙ্গলে অভিযান চালানো হয়।