শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বাবা-মাকে ঘিরে ছয় বছরের ছোট্ট শিশুর পৃথিবী। ভালোবাসা, অভিযোগ, অনুযোগও তাঁদের ঘিরেই। সন্তানের জন্মের পর বাবা-মা ভালোবেসে নাম রেখেছিলেন অত্রি। বাড়ি ও পরিচিত মহলে অত্রি পরিচিত 'জো' হিসেবে। আর সেই ছোট্ট জো-ই এখন প্রবল সমস্যায়। সেই সমস্যা নিয়ে ছোট্ট চিঠি লিখে ফেলেছে সে। আর সেই চিঠিই এখন ভাইরাল। কারণ, আর কাউকে নয়, দাঁতকে উদ্দেশ্য করে সে চিঠি লিখেছে।
জলপাইগুড়ির স্টেশন রোডের বাসিন্দা অভ্রদীপ ঘটক, পেশায় ফিল্মমেকার। তাঁর ছয় বছরের ছোট্ট ছেলে অত্রি ওরফে জো। বয়স আন্দাজে কথা বলাও শুরু করেছে। গোটা গোটা বাংলায় পেন্সিলে লিখছেও সে। কিন্তু সেই ছোট্ট অত্রি এখন সমস্যায়। কী সেই সমস্যা? বেশ কিছুদিন হল তার দুধের দাঁত পড়ে গিয়েছে। আর সেই নিয়েই কমবেশি ক্ষেপানো শুরু হয় তাকে। মজা করে মাঝেমধ্যেই 'ফোকলা' বলে ক্ষেপানো হচ্ছে। ছোটবেলায় সব শিশুরই দুধের দাঁত পড়ে। আবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাঁত বেরিয়েও পড়ে। এক্ষেত্রে কিছুদিন পেরিয়ে গেলেও তার দাঁত গজাচ্ছে না। এদিকে ফোকলা বলে পরিচিতরা মজা করে ডেকেও ফেলছে।
আর তাতেই অভিমান জমেছে তার মনে। বাবা-মাকে এই বিষয়ে বলেওছিল ছোট্ট অত্রি। কিন্তু তাঁরাও এই বিষয়ে কোনও সুরাহা করতে পারেননি। এরপরই দাঁতকে উদ্দেশ্য করে মাত্র তিনটে শব্দে চিঠি লিখে বসেছে সে। 'দাঁত তাড়াতাড়ি এসো।' এই লাইন লিখে বাবার কাছে যায় সে। পোস্ট অফিসে গিয়ে সেই চিঠি পোস্ট করতে বারবার বাবাকে অনুরোধ করে সে। কিন্তু ছেলের ওই চিঠি কীভাবে পোস্ট অফিসে নিয়ে যাওয়া যাবে! সেই নিয়ে প্রশ্ন বাবার মনেও উঠেছিল। শেষপর্যন্ত ছেলের মন রাখতে ফেসবুকেই ওই চিঠি ছবি আকারে পোস্ট করেন অভ্রদীপ। আর তারপর থেকে সেই চিঠিই ভাইরাল। সমাজমাধ্যমে সেই চিঠি ঘুরে বেড়াচ্ছে। নেটিজেনরা সকলেও ছোট্ট অত্রির পক্ষে সওয়াল করছেন। তাকে ক্ষেপানো উচিত নয়, অনেকে সেই কথাও বলছেন। কেউ ফিরে গিয়েছেন নিজের ছোটবেলায়।
এই বিষয়ে অভ্রদীপ ঘটক জানিয়েছেন, পোস্ট অফিসে এই চিঠি কীভাবে পোস্ট করা যাবে! সেজন্য সামাজিক মাধ্যমে ছবি আকারে সেটি দেওয়া হয়। কিন্তু সেই চিঠি যে ভাইরাল হবে, বোঝা যায়নি। দাঁত উঠছে না বলে ছেলের যে মনখারাপ, সেটাও বুঝতে পারছেন বাবা।