shono
Advertisement
Moynaguri

জমি হাঙরদের র‍্যাকেট ময়নাগুড়িতেও! ধরলা নদী জবরদখল মুক্ত করার দাবিতে সরব স্থানীয়রা

নদী উদ্ধারের জন্য সেচ এবং ভূমি ও রাজস্ব দপ্তরের দ্বারস্থ হচ্ছেন তারা।
Published By: Paramita PaulPosted: 04:54 PM Jul 03, 2024Updated: 04:54 PM Jul 03, 2024

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ধরলা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে তেজপাতা ও চা বাগান। তৈরি হয়েছে বিপজ্জনক পরিস্থিতি। এভাবে নদী লোপাট হলেও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ছিলই। সম্প্রতি নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বেদখল হয়ে যাওয়া সরকারি জমি উদ্ধারের নির্দেশ দিতে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির ওই নদী দখল মুক্ত করার দাবিতে সরব হয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। প্রশ্ন তুলেছেন নদী এলাকা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হয় কেমন করে! নদী উদ্ধারের জন্য সেচ এবং ভূমি ও রাজস্ব দপ্তরের দ্বারস্থ হচ্ছেন তারা।

Advertisement

চুরি নয়। রীতিমতো ডাকাতি। সেটাও বেপরোয়াভাবে প্রকাশ্যে। আস্ত নদী দখল করে শুরু হয়েছে চাষাবাদ। গজিয়েছে তেজপাতা ও চা বাগান। ইদানিং সেখানে নার্সারি গড়ে তোলার তোরজোর শুরু হয়েছে। অভিযোগ, নদীর দখলদারদের দাবি জমি তাদের! রয়েছে সরকারি নথি! এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, নদী এলাকার জমি সরকারের। সেটার রায়তিস্তত্ব কেমন করে ব্যক্তি নামে হয়েছে? তবে কি শিলিগুড়ির কাওয়াখালি, পোড়াঝাড়, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির মতো জমি হাঙ্গরদের র‍্যাকেট ময়নাগুড়িতেও সক্রিয়? এখানেও কি মোটা টাকা লেনদেনের বিনিময়ে নদীর জমি দখলে নিয়ে প্লট করে বিক্রি চলছে? যেমনটা হয়েছে মাটিগাড়া, নকশালবাড়িতে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, জেলা পরিষদের অধীনে প্রচুর জমি রয়েছে ময়নাগুড়ি শহরজুড়ে। ওই জমির বেশিরভাগ বেদখলে চলে গেলেও হেলদোল নেই প্রশাসনের।
ব্যক্তিগত মালিকানার জমি দখলে নিতে জমি হাঙ্গরদের র‍্যাকেট কতটা বেপরোয়া সেটা কয়েকমাস আগে মা ও ছেলে খুনের ঘটনায় স্পষ্ট। ওই ঘটনায় দুষ্কৃতীদের কেশাগ্র রহস্যজনক কারণে এখনও পুলিশ ছুঁয়ে দেখতে পারেনি। বিভিন্ন মহলে অভিযোগ ফিরছে, এখানে ধরলা, তিস্তা, জলঢাকা নদী এলাকা ঘিরে বেআইনি জমি কারবারের সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন থেকে সক্রিয় হলেও প্রশাসনের কর্তারা তো বটেই। রাজনৈতিক দলের নেতারাও রহস্যজনকভাবে মুখে কুলুপ এটে ছিলেন।

[আরও পড়ুন: এফআইআরে নামই নেই ভোলে বাবার! হাথরাসের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বঘোষিত ধর্মগুরুর সহকারী]

মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পর দখল হয়ে যাওয়া নদী পুনরুদ্ধারের দাবি ক্রমশ জোড়ালো হতে শুরু করেছে। ধরলা নদী উদ্ধারের দাবিতে সরব হয়েছেন ময়নাগুড়ি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর মিতু চক্রবর্তী এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুমুদ রায়। তাতেই জমি হাঙ্গরদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। মিতু চক্রবর্তী বলেন, "পুরনো ম্যাপ ফেলে ধরলা নদীর এলাকা বের করে সেচদপ্তরকে গাইড বাধের ব্যবস্থা করতে হবে। নদী জবরদখল মুক্ত করতে হবে।" পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কুমুদ রায় বলেন, "বিষয়টি নিয়ে ভূমি ও রাজস্ব দপ্তরের সঙ্গেও কথা বলব।"

ময়নাগুড়ি রোড সংলগ্ন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ধরলা নদী বক্ষে কংক্রিটের খুঁটি পুতে কয়েক একর জমি জুড়ে তেজপাতা বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। দক্ষিণ মৌয়ামারি ও উল্লারডাবরি সংলগ্ন এলাকায় নদী ভরাট করে চা বাগান তৈরি হয়েছে। ঘরবাড়ি, মন্দির গড়ে উঠেছে। বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েতের উল্লারডাবরি রেলসেতু থেকে পদমতি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাসন পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ওই পরিস্থিতির জন্য নদী নালার চেহারা নিয়েছে। অথচ ময়নাগুড়ি পুরসভা এবং মাধবডাঙা ও বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরাট অংশের নিকাশি ব্যবস্থা ওই নদীর উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু নদী ও জাতীয় সড়কের পাশের নয়ানজুলি দখল হয়ে যাওয়ায় ময়নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখোমুখি। এদিকে নদী দখল হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে নদীর জলে প্লাবিত হতে শুরু করেছে বসতি এলাকা। শুধু তাই নয়। মৎস্যজীবী সংগঠনের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ধরলা নদী দখল হতে অন্তত ১৫ হাজার মৎস্যজীবী বিপন্ন হয়েছে। প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমি সেচের জল না পেয়ে ধুঁকছে।

[আরও পড়ুন: ভোলে বাবার গুণমুগ্ধ ছিলেন খোদ অখিলেশ! সৎসঙ্গে সপা প্রধানের ছবি প্রকাশ্যে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ধরলা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে তেজপাতা ও চা বাগান। তৈরি হয়েছে বিপজ্জনক পরিস্থিতি।
  • এভাবে নদী লোপাট হলেও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ছিলই।
  • নদী উদ্ধারের জন্য সেচ এবং ভূমি ও রাজস্ব দপ্তরের দ্বারস্থ হচ্ছেন তারা।
Advertisement