shono
Advertisement

Breaking News

Madhyamgram

নিয়মিত নেশা, পরকীয়ায় জড়ানো! পিসিশাশুড়ি খুনে 'উচ্ছৃঙ্খল' পুত্রবধূর কথা বললেন ফাল্গুনীর শ্বশুর

ধৃত ফাল্গুনী ও তার মা আরতিকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বারাসত আদালত।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 09:40 PM Feb 27, 2025Updated: 10:26 PM Feb 27, 2025

অর্ণব দাস, বারাসত: ঠান্ডা মাথায় পিসিশাশুড়িকে খুন করে দেহ লোপাটের পরিকল্পনা একটুর জন্য ব্যর্থ হয়েছে। ট্রলিবন্দি মৃতদেহ আহিরিটোলা ঘাটে ফেলতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে মধ্যমগ্রামের ফাল্গুনী ঘোষ ও তার মা আরতি ঘোষ। মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার তাদের বারাসত আদালতে পেশ করে। এজলাসে কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর মাথা ঘুরে পড়ে যায় আরতি। পরে সুস্থ হলে দুজনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কিংশুক সাধুখাঁ।

Advertisement

এই হাড়হিম ঘটনাই এই মুহূর্তে আলোচনার কেন্দ্রে। স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলার মাঝে পিসি শাশুড়ির সঙ্গেও সম্পত্তিগত বিবাদ ছিল ফাল্গুনীর। যার জেরে শেষ পর্যন্ত খুন হতে হল বৃদ্ধা সুমিতা ঘোষকে। নিজের বোনের এহেন মর্মান্তিক পরিণতি দেখে আর স্থির থাকতে পারেননি ফাল্গুনীর শ্বশুর সুবল ঘোষ। পুত্রবধূর কীর্তিকলাপ নিয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, পিতৃহারা হারা মেয়ে ফাল্গুনী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে টিউশন পরিয়ে সংসার চালাত। বছর সাত আগে ম্যাট্রিমনি সাইটে ফাল্গুনীর খোঁজ পান সুবলবালু। তাকে দেখে ও অসহায়তার কথা শুনে ছেলে শুভঙ্করের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করেছিলেন। তখন মা-মেয়ে দমদমের পূর্ব সিঁথি লেনের বাসিন্দা ছিল। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে কলকাতায় যাওয়ার জেদ করার পাশাপাশি ফাল্গুনীর নেশায় আসক্ত বলে জানতে পারে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।

বারাসত আদালতে ধৃত ফাল্গুনীর মা আরতি ঘোষ।

সুবলবাবু জানান, বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ফাল্গুনী অসমে চলে গিয়েছিল। তবে মায়ের সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বারবার কলকাতায় আসতে চাইত। তখনি শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সন্দেহ হয়, তার বিবাহ বহির্ভূত কোনও সম্পর্ক আছে। এছাড়া বিয়ের পর থেকে নিয়মিত মদ্যপানের নেশা ছিল বউমার। একবার অসমের জোড়হাটের শ্বশুরবাড়ির পাড়ার দুর্গাপুজোর সময় মদ্যপ অবস্থায় পড়েছিল ফাল্গুনী। প্রতিবেশীরা তুলে তাকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়েছিল। বছর তিনেক আগে চিকিৎসার জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি কলকাতায় এলে তাদের সঙ্গেই এসেছিল ফাল্গুনী। দশদিন পর ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু না ফিরে মধ্যমগ্রাম থানায় ডিভোর্স চেয়ে খোরপোষের মামলা করে দেয় সে। তাতে স্তম্ভিত হয়ে যান শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।

বোন সুমিতার খুন নিয়ে সুবলবাবুর স্পষ্ট দাবি করেন, "একই চৌহদ্দির মধ্যেই আমার আর বোনের বাড়ি। সেই কারণেই তাঁর সঙ্গে বউমা ফাল্গুনীর সম্পর্ক। পুজোর সময় শিয়ালদহের এক বোনের বাড়িতে কয়েকমাস থাকবে বলে এখান থেকে গিয়েছিল সুমিতা। মধ্যমগ্রামে যে সে এসেছিল, জানতাম না। নিঃসন্তান বোনের নিজের বাড়ি আছে। বিয়ের সব সোনার গয়না আছে। নগদ টাকাও আছে। এসব হাতানোর জন্য পূর্ব পরিকল্পনামাফিক তাঁকে খুন করা হয়েছে বলেই মনে করি।"

এই ট্রলিতেই পিসিশাশুড়ির দেহ টুকরো করে কলকাতায় এনে লোপাটের ছক ছিল মা-মেয়ের। ফাইল ছবি।

সুবলবাবুর আরও বক্তব্য, ''ছেলেকে ব্ল্যাকমেল করে ফাল্গুনী বাড়িতেই মদ্যপান করত। বাধা দিলে গন্ডগোল বাঁধত। বাপেরবাড়ি যাওয়ার জন্য আমরাই টিকিট কেটে পাঠাতাম। কিন্তু প্রতিমাসে কেন যেতে হবে? এনিয়ে আমাদের সন্দেহ ছিল। যে যাই বলুক না কেন, ফাল্গুনী যথেষ্ট ঠান্ডা মাথায় কথা বলত, অন্যদের কিছু বোঝানোর ক্ষমতা ছিল ওর।'' সেই ঠান্ডা মাথার বউ যে এমন কাণ্ড ঘটাবে, তা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেনি ঘোষ পরিবার।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • পিসিশাশুড়ি খুনে ধৃত ফাল্গুনী ঘোষের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনের কথা বললেন শ্বশুর।
  • বিয়ের পর থেকে নেশায় আসক্ত, পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া নিয়ে সংশয় ছিল পরিবারের।
  • বৃহস্পতিবার বারাসত আদালতে পেশ করা হলে ফাল্গুনী ও তার মাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
Advertisement