shono
Advertisement
SIR in West Bengal

বাড়িতে SIR শুনানির আর্জি নাকচ, অ্যাম্বুল্যান্সেই হাজিরা দিতে গেলেন বারাসতের সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ

অন্যদিকে, হাবড়ায় শুনানি কেন্দ্রের লাইনে দাঁড়িয়েই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ষাটোর্ধ্ব আরেক বৃদ্ধ।
Published By: Subhankar PatraPosted: 07:43 PM Dec 30, 2025Updated: 07:57 PM Dec 30, 2025

অর্ণব দাস, বারাসত: অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে এসআইআরের শুনানি কেন্দ্রে আসলেন অসুস্থ সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ! আবেদন করা হয়েছিল বাড়িতে গিয়ে শুনানি করা হোক। কিন্তু সেই আবেদন মানা হয়নি। বিপাকে পড়ে পরিবার। এদিকে শুনানিতে হাজির না হলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়তে পারে। সেই আশঙ্কায় অ্যাম্বুল্যান্স করে বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বিডিও অফিসে হাজিরা দিলেন বৃদ্ধ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বারাসতে।

Advertisement

অন্যদিকে, নিজের নাম ভোটার লিস্টে থাকবে কি না, সেই চিন্তায় হাবড়ার শুনানি কেন্দ্রের লাইনে দাঁড়িয়েই অসুস্থ হয়ে পড়লেন ষাটোর্ধ্ব আরেক বৃদ্ধ। মঙ্গলবার শুনানির চতুর্থ দিনের এই দুর্ভোগের চিত্র দেখে নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল।

বারাসত পুরসভার ৩০নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বরিশাল কলোনির বাসিন্দা সুনীল বাড়ুই। কোমরের হাড় ক্ষয়ে যাওয়ায় বছর খানেক ধরে তিনি শয্যাশায়ী। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় কমিশনের শুনানিতে ডাকা হয় তাঁকে। জেলা প্রশাসনের কাছে বাড়িতে এসে শুনানি করার জন্য আবেদনও করেছিলেন পরিবার। কিন্ত রাজি হয়নি প্রশাসন। তাই বাধ্য হয়ে কোমর ক্ষয়ের যন্ত্রনা নিয়ে বাড়ি থেকে কমবেশি ১০ কিলোমিটার দূরে বারাসত ১ নম্বর ব্লকের শুনানির কেন্দ্রে যেতে হয়েছে অসুস্থ সুনীলবাবুকে। তাঁকে শুনানি কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করেছেন বারাসত পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশনি মুখোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের কর্মীরা।

শুনানি সেন্টারে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়েই ছিলেন সুনীল বাড়ুই। কমিশনের কর্মীরা অ্যাম্বুলেন্সে গিয়েই তাঁর শুনানি করিয়েছেন, ছবি তুলেছেন। এনিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধের আত্মীয়া মাধুরী বাড়ুই বলেন, "গত এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। বাড়িতে এসে শুনানি করার জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন থেকে বলা হয়ে শুনানি কেন্দ্রে যেতেই হবে। তাই বাধ্য হয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করেই নিয়ে এসেছি। যে কাজটা শুনানি কেন্দ্রে করল, সেটা বাড়িতে গিয়ে করলে এমন হয়রানি ও দুর্ভোগের মুখে পড়তে হত না।" ঘটনার নিন্দা করে অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, "ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে অসুস্থ, শয্যাশায়ী বৃদ্ধকে অ্যাম্বুলেন্স করে আসতে হচ্ছে। এটা নির্বাচন কমিশনের প্রহসন।"

অন্যদিকে, দীর্ঘ বছর ভোট দিলেও ২০০২সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না হাবড়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়গাছি এলাকার বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির সন্তোষ দাসের। তাই তাকে ও তাঁর মেয়ে মায়া সরকারকে শুনানিতে ডাকা হয়। সেই মতো মঙ্গলবার বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে হাবড়া ১ নম্বর ব্লক বিডিও অফিসের শুনানির লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন মায়া। দীর্ঘ সময় ধরে শুনানির লাইনে অপেক্ষা করতে করতে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সন্তোষবাবু। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপতালে। সেখানেই চিকিৎসাধিন আছেন বৃদ্ধ। তাঁর শুনানিও হয়নি।

এই ঘটনার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে মেয়ে মায়া বলেন, "বাবা বহু বছর ধরে হাবড়ার জয়গাছির বাসিন্দা। একাধীক নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু ২০০২ সালে ভোটার তালিকায় বাবার নাম না থাকায় দুশ্চিন্তা করতেন। এদিন শুনানির লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। এই হয়রানির জন্য কমিশন দায়ী।" খবর পেয়ে হাসপাতালে যান পুরসভার চেয়ারম্যান নারায়ণচন্দ্র সাহা। তিনি বলেন, "নোট বন্দির সময়ের লাইনে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের হয়রানি, দুর্ভোগের ছবি এবার শুনানির সময় উঠে এল। সন্তোষ দাস এদেশের নাগরিক। তিনি হাবড়ার ভোটার।" অন্যদিকে, নব্বই বছর বয়সী দেগঙ্গার সোয়াই- স্বেতপুরের বাসিন্দা জয়গুননেসা বিবি ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে এসে শুনানি প্রক্রিয়ায় হাজির ছিলেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে এসআইআরের শুনানি কেন্দ্রে আসলেন অসুস্থ সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ! আবেদন করা হয়েছিল বাড়িতে গিয়ে শুনানি করা হোক।
  • কিন্তু সেই আবেদন মানা হয়নি। বিপাকে পড়ে পরিবার। এদিকে শুনানিতে হাজির না হলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়তে পারে।
  • সেই আশঙ্কায় অ্যাম্বুল্যান্স করে বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে বিডিও অফিসে হাজিরা দিলেন বৃদ্ধ। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বারাসতে।
Advertisement