চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: ফের সালিশি সভা, গ্রামের মোড়লদের দাপট। এবার দুই পরিবারকে ‘একঘরে’ করার নিদান ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) মহিষাদল এলাকা। রঙ্গিবসান গ্রামের সর্বত্র বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দুই পরিবারের নাম, পরিচয় জানানো হয়েছে। সঙ্গে হুঁশিয়ারি, তাদের সঙ্গে মেলামেশা করবে যারা, তাদের জন্যও একই ফতোয়া জারি করা হবে। রবিবার এ ধরনের পোস্টার ঘিরে গ্রামে শোরগোল। স্রেফ রাজনৈতিক কারণে তাঁদের উপর এমন খাঁড়া নেমে এসেছে, এমনই দাবি।
মহিষাদলের (Mahishadal) রঙ্গিবসান গ্রাম। সেখানে রবিবার সকালে একটি বিজ্ঞপ্তি চোখে পড়ে। তাতে গ্রামের শীতলা পুজোর ভোগ বিতরণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারপরই দুই পরিবারের কথা উল্লেখ করে নিদান দেওয়া হয়েছে। তাতে সাফ লেখা, গুরুপদ বাড়ুই ও স্বরূপ ঘোড়াইয়ের পরিবারকে পাড়া থেকে একঘরে (Boycott) করে রাখা হয়েছে। মন্দিরে পুজো দেওয়া, প্রসাদ নেওয়া – এসবও নিষিদ্ধ। পরিবারের অন্য কোনও পরিবার যদি তাঁদের সেই কাজে সাহায্য করে তাহলে মোটা অঙ্কের জরিমানা ও একঘরে করে দেওয়া হবে। গ্রামের সর্বত্রই দেওয়া হয়েছে এই পোস্টার। পল্লি কমিটি ওই কাজ করেছে বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: আত্মঘাতী স্কোয়াড গড়ে হামলার ছক! হাওড়া থেকে ধৃত ২ ‘আইএস জঙ্গি’কে জেরায় চাঞ্চল্যকর তথ্য]
কিন্তু যাঁদের নাম করে এহেন পোস্টার, তাঁরা কী বলছেন? স্বরূপ ঘোড়ইয়ের বক্তব্য, আজ নয়, গত ৮ বছর ধরেই তাঁরা এমন একঘরে। তিনি বিজেপির (BJP) সমর্থক, সেই কারণে তাঁর উপর এমন নিদান বলে মনে করছেন তিনি। যাঁরা এমনটা করেছে অর্থাৎ পল্লি কমিটির সদস্য, তাঁরা সকলেই তৃণমূলের (TMC) সমর্থক। জোর করে স্বরূপবাবুর চাষের জমিও গ্রাম কমিটি কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। অন্য রাজনৈতিক দলের সমর্থক হলেই গ্রামে এমন নিদান জারি হবে? এই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এনিয়ে অবশ্য এখনও থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি স্বরূপবাবু। পোস্টারে নাম থাকা আরেকজন, গুরুপদ বাড়ুইয়ের মত, কী কারণে তাঁর নামে এহেন পোস্টার লেখা হয়েছে, তা তিনি জানেন না। বিষয়টি তিনি থানা ও বিডিও-কে জানাবেন। এই কাজে অপমানিত বোধ করছেন প্রৌঢ় গুরুপদবাবু।