সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশপথটিই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে রেল। পাশের সংকীর্ণ রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে। এই প্রবেশপথটি সোজা ফুট ওভারব্রিজে উঠে গিয়েছে। দুর্ঘটনার পর আজ, সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে স্বাভাবিকভাবেই ওই ফুট ওভারব্রিজে ভিড়ের চাপ ছিল। যা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে রেল, আরপিএফ ও জিআরপিকে। এদিন অফিস টাইমে ওই ফুট ওভারব্রিজে ভিড় এতটাই বেশি ছিল যে কোনও সময় পদপিষ্ট হওয়ার মত পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। ভিড়ের চাপে অনেকেই আবার ওভারব্রিজে না উঠে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাইন পারাপার করেছেন, এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে উঠে ট্রেন ধরতে।
সোমবার এই স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজের ভিড়ে মনে করিয়ে দিয়েছে গত ৮ নভেম্বর পদপিষ্টের ঘটনাকে। ওইদিন বিকেলে ৪ ও ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ফুট ওভারব্রিজে ওঠানামার সিঁড়িতে ভিড়ের চাপে পদপিষ্ট হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতিও করতে হয়েছিল। শনিবার রাতের দুর্ঘটনার পর স্টেশনের মূল প্রবেশপথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফুট ওভারব্রিজের ভিড় সেদিনের ছবি ফিরিয়ে এনেছে।
[আরও পড়ুন: ‘মার খেলেও লড়বে ঐশী’, প্রত্যয়ী অশীতিপর দিদিমা]
নিত্যযাত্রী সোমা বিশ্বাস বলেন, “উপায় নেই। সময়ে ট্রেন ধরতে হবে। এই ভিড় ঠেলেই যেতে হচ্ছে। যা ভিড়ের চাপ, তাতে পদপিষ্টের মত ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মাস দুয়েক আগে ঘটেছিল তো এখানে।” আরেক যাত্রী তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সকালে বলেন, “আমি সপরিবারে হাওড়া যাচ্ছি। বাচ্চা রয়েছে। একটিমাত্র গেট দিয়ে ওই ভিড় ঠেলে ওভারব্রিজ দিয়ে বাচ্চা নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। ভিড়ে চাপা পড়ে যাব। তাই কী আর করব? বাচ্চা নিয়ে রেললাইন টপকে যাচ্ছি। জানি, এতেই ঝুঁকি বেশি।”
গত শনিবার রাত ৮টা ৫ মিনিটে প্রথমবার স্টেশনের প্রবেশপথে অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনের বারান্দার একাংশ ধসে পরে। এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। জখম হয়েছেন আরও একজন। অভিযোগ, প্রায় ১৬৫ বছরের প্রাচীন ভবনের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকভাবে করা হয়নি। বাইরে সৌন্দর্যায়ন ঘটানো হলেও ভিতরে ফোঁপরা হয়ে গিয়েছিল ভবনটি। কয়েকদিন আগে বাইরে সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছিল। ড্রিল মেশিনও ব্যবহার করা হচ্ছিল। তার কম্পনের জেরেই এই ভবনের একাংশ ভেঙে গিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও তা এখনই মানতে নারাজ রেল। ঘটনার পরেই উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মা জানান, আইআইটি খড়গপুরে বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেওয়া হয়েছে গোটা ভবনটির পরিস্থিতি জানতে। এছাড়া তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে ভবনটি কেন ভেঙে পড়েছে, তা জানতে। এদিন বিকেলে একটি শুনানিরও আয়োজন করে রেল। দুর্ঘটনার বিষয়ে কারও কাছে কোনও তথ্য থাকলে, তা জানানো হবে সেই শুনানিতে।
[আরও পড়ুন: ক্রমশ জোরাল হচ্ছে ‘বাঘ’ আতঙ্ক, ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে পাতা হল খাঁচা]
The post দুর্ঘটনার পর বন্ধ বর্ধমান স্টেশনের মূল প্রবেশপথ, ভিড়ের চাপ ফুটওভারব্রিজে appeared first on Sangbad Pratidin.
