সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: নিজে বিপত্নিক। এদিকে শ্যালিকার স্বামীও মারা গিয়েছেন অনেক দিন। জামাইবাবুর সঙ্গে শ্যালিকার প্রেমের সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল। কিন্তু সংসার করতে আপত্তি তোলেন ওই মহিলা। দীর্ঘদিনের অনুরোধেও এতটুকু বরফ গলেনি ওই প্রেমিকার। শেষপর্যন্ত ছুরি দিয়ে শ্যালিকাকেই কোপালেন ওই ব্যক্তি। এরপর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নদিয়ার হাঁসখালি থানা এলাকার।

কৃষ্ণনগর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরাপাড়ার বাসিন্দা প্রৌঢ় বিমল বিশ্বাস পেশায় রাজমিস্ত্রি। স্ত্রী অনেক আগেই গত হয়েছেন। দুই সন্তান, তাঁদের স্ত্রী ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে তাঁর সংসার। এদিকে হাঁসখালি থানা এলাকায় শ্যালিকার বাড়ি। তাঁর স্বামীর মারা গিয়েছেন। এই অবস্থায় শ্যালিকা ও জামাইবাবুর মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। সেই প্রেমের সম্পর্ক চাপাও ছিল না আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের মধ্যে। শ্যালিকার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াতও ছিল তাঁর।
এদিকে সেই প্রেমের সম্পর্ককে পরিণতি দিতে চাইছিলেন বিমল বিশ্বাস। শ্যালিকাকে বিয়ে করে ঘর বাঁধতে চাইছিলেন। বিয়ের জন্য বেশ কিছুদিন শ্যালিকাকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বিয়েতে আপত্তি তোলেন ওই মহিলা। জামাইবাবুর সঙ্গে প্রেমে আপত্তি নেই। কিন্তু বিয়ে করা সম্ভব নয়। সেই কথা জানিয়ে দেন ওই মহিলা। এই কথায় মুষড়ে পড়েছিলেন বিমল বিশ্বাস। গতকাল মঙ্গলবার রাতে হাঁসখালির শ্যালিকার বাড়িতে গিয়েছিলেন বিমল। ফের শ্যালিকাকে বিয়েতে রাজি করানোর জন্য চলতে থাকে অনুরোধ। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন ওই মহিলা।
এরপরই খেপে গিয়ে শ্যালিকাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন তিনি। মহিলার মাথায় ও হাতে একের পর এক কোপ মারা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় আর্তনাদ করতে থাকেন তিনি। এদিকে ঘটনার পরেই ঘর থেকে বেরিয়ে যান ওই ব্যক্তি। রাতেই কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে বিমলকে গ্রেপ্তার করে। রক্তাক্ত মহিলাকে উদ্ধার করে কৃষ্ণনগর শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মহিলার হাতের একটি আঙুল মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। মাথায় মোট ১৭টি সেলাই পড়েছে। ধৃতকে এদিন কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হয়।