সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভয়াবহ আগুনে পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ডে পুড়ে গেল ১২টি দোকান। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এক এক করে পুড়তে থাকে বিভিন্ন দোকান। তার মধ্যে রয়েছে ফলের ঠেলাগাড়িও। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন মিলিয়ে প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন আয়ত্তে আসে। এই প্রত্যেকটি দোকানই বিধি বহির্ভূতভাবে পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের ঠিক পিছনদিকে যেখানে বরাবাজারগামী বাস ছাড়ে সেখানে বহুদিন ধরে চলছে বলে অভিযোগ। ওই বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে পুরসভার মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ে উঠলেও সেই দোকানগুলি এখনও বিতরণ হয়নি। তাই আগের মতো যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঝুপড়ি, কংক্রিট, টিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অথচ পুরুলিয়া পুরসভা জানিয়েছিল, এভাবে বাসস্ট্যান্ড দখল করে কোন দোকানই থাকবে না। কিন্তু কার মদতে এই দোকানগুলি বসেছিল সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে এই অগ্নিকাণ্ডের পর।
পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, "আমি বাসস্ট্যান্ডে যাব। কোথা থেকে কি হয়েছে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা আরও একটি মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ার প্রস্তাব দেব।" এদিকে এই বাসস্ট্যান্ডে যে মার্কেট কমপ্লেক্স আগে থেকেই রয়েছে তার দোকান বিতরণের জন্য সোমবার বৈঠক রয়েছে পুরসভায়। পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ড পুর শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। বর্তমানে এর মালিকানা প্রশাসন। কিন্তু দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পুরুলিয়া পুরসভা। রবিবার তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে ১১টা হবে। হঠাৎই পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের পিছন দিকে একের পর এক দোকান জ্বলতে থাকে। শুরু হয়ে যায় চিৎকার-চেঁচামেচি। চারদিক কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। পুড়তে থাকে একের পর এক দোকান। সঙ্গে ফলের ঠেলাগাড়ি। পাশেই দমকল হওয়ায় একটি ইঞ্জিন দ্রুত চলে আসে। কিন্তু তারা আগুন নেভাতে হিমশিম খান।
পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই ১২টি দোকান
তৎক্ষণাৎ চলে আসে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশও। তারপর আরও দুটি দমকলের ইঞ্জিন এলে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরুলিয়া দমকল বিভাগ জানিয়েছে, ওই এলাকায় একটি প্যাকেট হাউসের দোকান থেকে ওই আগুন ছড়ায় বলে তাদের অনুমান। দমকলের সঙ্গে এলাকার মানুষজনও উদ্ধার কাজে হাত লাগান। বেশি রাত পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডে থেকে তদারকি করেন পুরুলিয়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ওই বাসস্ট্যান্ড স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য বিভাসরঞ্জন দাস। তিনি বলেন, "আগুনের ভয়াবহতা ছিল অনেকটাই। দমকলের তৎপরতায় দ্রুত নেভানো গিয়েছে। না হলে আরও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। প্রায় ১২টি দোকান ভষ্মীভূত হয়ে গিয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে।" এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দমকল ও পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ।
