জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: রাজ্য়ে এসআইআর নিয়ে তুঙ্গে চাপানউতোর। তারই মাঝে শনিবার রানাঘাটে সভা করার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদির। আর ঠিক এদিনই মতুয়াগড় বাগদায় পড়ল পোস্টার। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে দেখে নেওয়ার হুমকি 'প্রতারিত মতুয়া'দের। এই পোস্টার নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
শনিবার দুপুরে বাগদার হেলেঞ্চা বাজারে পোস্টারগুলি নজরে আসে ৷ সেখানে লেখা রয়েছে, মতুয়া আর নমঃশূদ্রকে পিছন থেকে ছুরি মারছে বিজেপি। ছাব্বিশে মতুয়ারা বিজেপিকে দেখে নেবে। মতুয়াদের কেন ধোঁকা দিলে? পোস্টারের নিচের দিকে ছোট অক্ষরে লেখা মতুয়া আর নমঃশূদ্র বিরোধী বিজেপি। যদিও ওই পোস্টারটি কোন দলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তার উল্লেখ নেই। ওই পোস্টার ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
এ বিষয়ে বিজেপি নেতা শিশির হাওলাদার বলেন, "এটা সম্পূর্ণ রূপেই তৃণমূলের চক্রান্ত। বিজেপি যে মতুয়াদের বন্ধু এটা তাঁরা জানেন। পোস্টার দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তৃণমূলের লোকেরাই। ছাব্বিশে তৃণমূলকেই দেখে নেবে মতুয়ারা।" পোস্টারের সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি তৃণমূলের বাগদা পশ্চিম ব্লক সভাপতি নিউটন বালার। তিনি বলেন, "যে সমস্ত মতুয়ারা বিজেপি করতেন তাঁরাই বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ হয়ে এখন গদ্দার বলছেন। শান্তনু ঠাকুর এসআইআরের মাধ্যমে মতুয়া উদ্বাস্তুদের অনুপ্রবেশকারী বানানোর চেষ্টা করছে। বিজেপিকে চিনতে পেরে মতুয়ারাই এই পোস্টার দিয়েছেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।"
মোদির সফরের মাঝেই মতুয়াদের নামে এই পোস্টার যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যদিও এদিন সন্ধ্যায় X হ্য়ান্ডেলে মতুয়াদের বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি লেখেন, ‘মতুয়া, নমশুদ্ররা তৃণমূলের দয়ায় নয়, সিএএ-র অধিকারে মাথা উঁচু করে ভারতে বসবাস করছেন, তাঁরা ভারতীয় নাগরিক। এই সিএএ আমাদের সরকারের করা। আমরা বাংলায় ক্ষমতায় এলে আরও অনেক কিছু করব।’ বলে রাখা ভালো, বিশেষত ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন নিয়ে আতঙ্কে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। খসড়া ভোটার তালিকায় প্রচুর মতুয়ার নাম বাদ যাওয়ায় সংশয়ের মধ্যে দিনযাপন করছেন তাঁরা। তাঁরা যে ‘রাজনীতির বোড়ে’, তা ভালোই বুঝতে পেরেছেন। আর তারপরই সম্ভবত এহেন কার্যকলাপ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
