চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: ভূপেন হাজারিকার সেই গানটির কথা মনে আছে,‘মানুষ মানুষের জন্য’। ঠিক এই গানকে স্মরণ করেই ওঁরা আজ পথে নেমেছেন। ওঁরা কান্দির নবপ্রজন্মের প্রতিনিধি। ‘নব প্রভাতের আলো’র সদস্য। ওঁদের কারও নাম কৌশিক, তো কারও নাম বাবু, আবার কারও নাম সুজিত। কিন্তু ওদের সকলের লক্ষ্য একটাই। প্রতিদিন চাঁদা তুলে ১০০ জন অসহায় দুঃস্থকে রান্না করা খাওয়ানো । সপ্তাহের একটি দিন স্থানীয় ১০০ জন দুঃস্থ মানুষকে পেট ভরে খাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন ওঁরা। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘নব প্রভাতের আলো’-র উদ্যোগে প্রতি সপ্তাহেই চলছে এই কর্মযজ্ঞ।
জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে কান্দির হিজলে ১০০ জন দুঃস্থকে মধ্যাহ্ন ভোজ করিয়েছে ‘নব প্রভাতের আলো’। এই সপ্তাহে কান্দি বাসস্ট্যান্ড দুপুরের ভুরিভোজে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেলেন এলাকার ১০০ জন দুঃস্থ মানুষ। এলাকাবাসী ধন্য ধন্য করলেও সেদিকে খেয়াল নেই সংস্থার সদস্যদের। বিষয়টিতে তাঁরা গুরুত্ব দিতেও নারাজ। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা কান্দির চিকিৎসক কৌশিক সেনগুপ্তর কথায়, ‘আমরা সবার আগে মানুষ। প্রতিটা দুঃস্থ মানুষের পাশে থেকে সেবা করা আমাদের কলেরই কর্তব্য। আমরা সেই কর্তব্যের কিছুটা পালন করতে পেরেছি। এতে আমরা খুশি। আজকের এই ধারাকে অব্যাহত রাখার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে মানুষের আশীর্বাদই আমাদের পাথেয়।’ অপর এক সদস্য সঞ্জীব দাসের বক্তব্য, ‘মানুষই পারে সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে। একটু চেষ্টা করলেই মানুষ নানা কিছু করতে পারে। আমরা সেটাই দেখিয়ে দিতে চাই।’
[ফেসবুকে কারবাইন হাতে ছবি পোস্ট, আটক তৃণমূলনেত্রীর স্বামী]
কান্দি পুরসভা এলাকায় ‘নব প্রভাতের আলো’র সূচনা মাত্র দু’বছর আগে। কান্দির কিছু যুবক উদ্যোগী হয়ে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি চালু করেছিলেন শুধুমাত্র অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে। দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের সেবা করার জন্য এই সংস্থা। ইতিমধ্যে এই সংস্থা কান্দি ছাড়াও বীরভূম, বর্ধমান, মালদহ-সহ বহু এলাকায় এই দুঃস্থদের খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করছে। তাই ‘নব প্রভাতের আলো’-কে নিয়ে গর্বিত কান্দিবাসী। কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারের কথায়, ‘আমাদের কান্দিতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘নব প্রভাতের আলো’ রয়েছে। এই ধরনের সংস্থা আরও প্রয়োজন। ওদের কাজে আমরা খুশি।’ কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার জানিয়েছেন, নব প্রভাতের আলোর সদস্যরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে যে কাজ করছে। শত বাধা বিপত্তি এড়িয়ে এই জনকল্যাণকর উদ্যোগ সাধারণ মানুষের চোখ খুলে দিয়েছে। এদিনও কান্দির হিজলে এই আয়োজনে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। বহু মানুষ পাত পেড়ে খান।
