জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ২৩ মার্চ, ১৯৩১। ফাঁসি দেওয়া হয় বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী ভগৎ সিং, রাজগুরু ও সুখদেবকে। এই ফাঁসির সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ ইমারতের ইট খসিয়ে দিয়েছিল। হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ ভুলে সেদিনও দেশের স্বার্থে এগিয়ে এসেছিল অগণিত ভারতীয়। তাঁদের স্মরণে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে রোজা ভেঙে রক্ত দিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজন যুবক।

ভগৎ সিং, রাজগুরুর, সুখদেবের আত্মবলিদানের দিনে বনগাঁ থানার কালুপুর নবতরণ সংঘে রবিবার সকালে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এদিন প্রায় ৪০০ জন রক্ত দেন। এগিয়ে আসেন মুসলিম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন যুবক।
কিন্তু এতে নতুন কী? মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই রক্তদেন। কিন্তু এখন রমজান মাস চলছে। চলতি মাসের শেষেই পবিত্র ইদ। মাসভর রোজা পালন করছেন তাঁরা। এই অবস্থায় রোজা ভেঙে রক্ত দিলেন সোহেল, মান্নানরা। তাঁদের কথায়, 'ধর্মের আগে কর্ম'। তাই মানব সেবায় রক্ত দিয়েছেন তাঁরা।
রক্ত দিয়ে মান্নান সর্দার বলেন, "রক্ত কোনও কলকারখানায় তৈরি হয় না। শুধুমাত্র মানবদেহেই তা পাওয়া যায়। মানুষের সেবার স্বার্থে, যাতে অন্যের উপকার হয় তাই রক্ত দিলাম। তবে এই প্রথম নয়, আগেও রক্ত দিয়েছি।"
ক্লাব সম্পাদক সৌমেন সরকার বলেন, "আজকের দিনেই দেশের স্বাধীনতায় আত্মবলিদান দিয়েছিলেন ভগৎ সিং, রাজগুরুর মতো বীর ভারতমাতার সন্তানরা। তাঁদের স্মরণেই এই রক্তদান শিবির। আমাদের লক্ষ্য ছিল ৫০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ। বনগাঁ মহকুমা ও হাসপাতালের রক্তের ঘাটতি মেটাতেই আমাদের এই চিন্তাভাবনা আজকে আমাদের মুসলিম ভাইরা রোজা ভেঙে রক্ত দিলেন। আমার মনে হয়, এটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।"