গোবিন্দ রায় ও অর্ণব দাস: আইনি জয়। ঠাকুরনগরের বারুণী মেলার দায়িত্ব পেলেন মমতাবালা ঠাকুরের হাতেই। মঙ্গলবার ঠাকুরবাড়ির আরেক সদস্য শান্তনু ঠাকুরের আবেদন খারিজ করে জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে মেলা আয়োজন করেছিল দু'পক্ষের মেলা পরিচালন কমিটি। ফি-বছর ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসঙ্গের মেলা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা পরিষদের তরফে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়। প্রায় ৬২ বছর আগের বাতিল হয়ে গিয়েছিল জেলা পরিষদ আইন। তারপরও ওই আইনকে হাতিয়ার করেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ ঠাকুরনগরের মতুয়া উৎসবের অনুমতি দিয়ে দিয়েছিল মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামীদের। ওই একই অনুষ্ঠানের অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। মঙ্গলবার সেই মামলা খারিজ করে দেন বিচারপতি বিভাস পট্টানায়েক। জানান, মেলার দায়িত্ব মমতাবালা ঠাকুরেরই। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই শুরু হবে পুণ্যস্নান।

২১৪ বছরের পুরনো মতুয়াদের আবেগের বারুণী মেলা। প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠে শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই শুরু হবে এবছরের পুণ্যস্নান। মেলা চলবে সাতদিন ধরে। বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে মেলার অনুমতি পেয়ে আসছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তবুও মেলার দখলদারি নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিজেপির সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের দ্বৈরথ সামনে এসেছে। অশান্তির আবহে বিগত বছরগুলিতে ধরে হওয়া বারুনী মেলাকে রাজনৈতিক সংঘাত বলেই আখ্যা দিয়েছিলেন মতুয়ার। এবছরও শেষমেশ মেলার অনুমতি পেয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর।
তবে হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও তৃণমূল ও বিজেপি প্রভাবিত দুই কমিটির পদাধিকারীরা বারুণী মেলা নিয়ে বৈঠকে বসে। সেখানেই দু'পক্ষকে তৈরি হয় ১৪ জনের মেলা পরিচালন কমিটি। এই নতুন কমিটির এবার পরিচালনা করবে বারুণী মেলা। মমতাবালা ঠাকুর বলেন, "মেলার অনুমতি আমি পেলেও মেলা পরিচালিত হবে নতুন কমিটির মাধ্যমে। মিলেমিশে কাজ করলে বারুণী মেলা নিয়ে মতুয়াদের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছবে।" শান্তনু ঠাকুরের দাদা গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর বলেন, "যে কারণেই হোক, এতদিন এটা হয়নি। এবার হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবেই মেলা হবে। এর ফলে বাইরের রাজনৈতিক লোকেরা ঠাকুরবাড়ির অন্দরে ও বারুণী মেলা নিয়ে রাজনীতি করতে পারবে না। ভবিষ্যতেও দুই কমিটি মিলে বারুণী মেলা করবে, এটাই চাইব।"