শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ফের র্যাগিংয়ের (Ragging) অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের নবোদয় বিদ্যালয়ে। এবারের ঘটনাস্থল উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) ডালখোলা। অভিযোগ, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে বাসন মাজার জন্য চাপ দেয় দশম শ্রেণির তিন ছাত্র। তা নিয়ে বাকবিতণ্ডার মাঝে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পিঠে জখম নিয়ে পরদিনই সে হস্টেল থেকে বাড়িতে চলে আসে। আতঙ্কে আর হস্টেলে (Hostel) ফিরতে চাইছে না ওই ছাত্র। ঘটনার কথা শুনে অবশ্য কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে সাসপেন্ড (Suspend) করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলে এ ধরনের ঘটনায় কড়া সমালোচনা করেছেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যেন বর্মন।
ঘটনা গত রবিবারের। বাড়ি থেকে ওইদিনই ছেলেকে নবোদয় স্কুলের হস্টেলে পৌঁছে দিয়েছিলেন ইটাহারের (Itahar) বোষ্টমতোলা গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর ঈশ্বরচন্দ্র পাল। ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। সেদিন রাতেই হস্টেলে গোল বাঁধে। অভিযোগ, রাতে খাবারের পর দশম শ্রেণির তিনজন অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রকে তাদের বাসন মেজে দেওয়ার কথা বলে। প্রথমে সে বাসন মাজতে অস্বীকার করে। তারপরই শুরু হয় মারধর। তাতে ভয় পেয়ে তিন ছাত্রের বাসন সে মেজে দেয়। কিন্তু তাতেই রেহাই মেলেনি। হস্টেলের ওই তিন ‘দাদা’ পালটা বলতে শুরু করে, বাসনগুলি সে নিজে মাজেনি। ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রকে দিয়ে মাজিয়েছে। সেই দাবিতে শুরু হয় ফের ‘অত্যাচার’।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠনের আগে রানিনগরে দলবদল, তৃণমূলে যোগ ২ কংগ্রেস সদস্যের]
রবিবার রাতে এই ঘটনার পর সোমবার ভোরেই সে বাবাকে ডেকে বাড়ি ফিরে আসে। বাবা পেশায় দিনমজুর। তিনি ছেলেকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গেলে সেখানে আরেকপ্রস্ত জটিলতা। অভিযোগ, ওই চিকিৎসক নাকি জানান, যদি হস্টেলে এই র্যাগিং নিয়ে তাঁরা কেউ কোথাও অভিযোগ না জানান, তাহলেই তিনি ছাত্রের শারীরিক পরীক্ষা করবেন ও প্রেসক্রিপশন (Prescription লিখে দেবেন। তাতেই রাজি হন ঈশ্বরচন্দ্রবাবু। লিখিত মুচলেকা দিয়ে তবেই ছেলের চিকিৎসা করান তিনি। গোটা পরিস্থিতিতে ভীষণই ভীত হয়ে পড়েছে ওই ছাত্র। আর হস্টেলে ফিরে যেতে চাইছে না। এনিয়ে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যেন বর্মনের প্রতিক্রিয়া, ”রাজ্য সরকারের উপর সব দোষ দেওয়া হয়। কিন্তু এটা তো কেন্দ্র সরকারের স্কুল। তাহলে এখানে কেন এসব ঘটছে?”