অর্ণব দাস, বারাকপুর:নৈহাটির বড়মা। যে নামেই ভক্তিতে যেন মাথা নুয়ে আসে। দেবী সম্পর্কে নানা গল্পকথা ভেসে বেড়ায় গঙ্গার পাড়ের শহরের অলিগলিতে। বড়মার পুজো পেরিয়েছে একশো বছর। ফলে বহরেও বেড়েছে। রাজ্য, দেশের গন্ডি টপকে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে রয়েছেন মায়ের ভক্তরা। কালীপুজোর দিন ভিড়ের ভয়ে অনেকেই পুজো দিতে আসেন না। কেউ আবার বিদেশে থাকায় আসতে পারেন না। সেই সমস্যার সমাধানে এবার ভক্তদের জন্য অ্যাপ আনল নৈহাটি বড়মা পুজো কমিটি। ঘরে বসে অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি বড়মাকে পুজার্ঘ্য দিতে পারবেন ভক্তরা।
কী করে পুজো দেওয়া যাবে? পুজো কমিটি জানাচ্ছে, প্লে স্টোর থেকে 'জয় বড় মা' অ্যাপটি ইনস্টল করে মেলের মাধ্যমে অ্যাপে লগ ইন করতে হবে। তার পরের ধাপে এডিট প্রোফাইলে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর দিয়ে তৈরি করতে হবে নিজের প্রোফাইল। এর পর অ্যাপের পুজো অপশনে ক্লিক করলেই অমাবস্যা, শনিবার, মঙ্গলবার-সহ একাধিক দিনের পুজোর তালিকা খুলে যাবে। নিজের পছন্দমতো দিন বেছে নিতে হবে। তার পরই খুলে যাবে নাম, গোত্র, ঠিকানা, তারিখ এবং ফোন নম্বর লেখার জায়গা। সেটি পূরণ করলেই পুজোর তালিকায় নাম নথিভুক্ত হয়ে যাবে।
তবে দক্ষিণা দেবেন কী করে? সেজন্যও রয়েছে নির্দিষ্ট অপশন। নাম নথিভুক্ত করার সময় দক্ষিণা দেওয়ার অপশনে গেলে নিজের খুশিমতো অর্থ দিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অনলাইন বা ইউপিআই অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা দিতে হবে। তবে দক্ষিণা দেওয়ার বিষয়টি ঐচ্ছিক। শুরুতেই দক্ষিণা দিতে চান নাকি দিতে চান না, দুটি অপশনই থাকবে। ইচ্ছেমতো বেছে নিতে পারবেন ভক্তরা।
অ্যাপের লোগো।
প্রসঙ্গত, গত বছর লক্ষ্মীপুজোর দিন নতুন মন্দিরের উদ্বোধন হয়। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কষ্টিপাথরের মূর্তি। পুজো কমিটির দাবি, তার পর থেকেই ভিড় বাড়ছে। পুজো কমিটি আরও জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে রাজ্যের একাধিক জেলা, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত-সহ বিদেশে থাকা ভক্তদের থেকেও পুজোর অনুরোধ আসছে।
বড়মা'র ১০১ বর্ষের পুজোয় ২২ ফুট সুউচ্চ ঘোর কালো কৃষ্ণবর্ণ মায়ের প্রতিমা নির্মাণ দেখতে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। তাই কালীপুজোর কদিন কোনও ভক্তই যাতে পুজো দেওয়া থেকে বঞ্চিত না থাকেন সেই ভাবনা থেকে অ্যাপ তৈরি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ছে। ইতিমধ্যেই 'জয় বড় মা' অ্যাপ তৈরি হয়ে অনলাইনে পুজো দেওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে পুজোর দিন মন্দিরে আগত সকল ভক্ত যাতে মায়ের পুজো দেখতে পারেন সেই জন্য মন্দিরের বাইরে একটি এলইডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছে।
লাগানো হচ্ছে এলইডি স্ক্রিন।
পুজো সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য বলছেন, "অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে পুজো দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের প্রথম থেকেই শর্ত ছিল স্বচ্ছতা রাখার। তাই অ্যাপের মাধ্যমে পুজো দেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণা বাধ্যতামূলক নয়। এছাড়াও অ্যাপের মাধ্যমে কতবার পুজো দেওয়া হয়েছে, মোট কত টাকা দক্ষিণা দেওয়া হয়েছে তার পেমেন্ট হিস্ট্রিও ভক্তরা দেখতে পারবেন।" এলইডি লাগানোর বিষয়ে বলেন, "এলইডি স্ক্রিন লাগানোর ফলে কালীপুজোর দিনগুলো-সহ সারা বছরই ভক্তরা মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়েই পুজো দেখতে পারবেন।"