অর্ণব দাস, বারাসত: এ এক গুণধরের কাণ্ড! জমি হাতাতে জীবিত বিবাহিত কাকাকে অবিবাহিত এবং মৃত প্রমাণ করতে পঞ্চায়েতের নকল প্যাড, স্ট্যাম্প বানিয়ে তাতে নিজেই পঞ্চায়েত প্রধানের হয়ে স্বাক্ষর করেছিলেন ভাইপো! শুধু তাই নয়, সাহসের সঙ্গে সেই ওয়ারিশন সার্টিফিকেট জমাও দিয়েছিলেন বিএলএলআরও অফিসে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। গোবরডাঙার মছলন্দপুরে সেই জালিয়াতি ধরা পড়ে শনিবার শ্রীঘরেই যেতে হল ভাইপোকে।

গোবরডাঙা থানার মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের বামনডাঙা গ্রামের এই ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ধৃতের নাম সমীর দাস। তাঁর কাকা হিমাংশু দাসের বামনডাঙা গ্রামে একটি ২৫ শতক জমি রয়েছে। কিন্তু তিনি দীর্ঘ বছর মহারাষ্ট্রে থাকায় ভাইপো সমীর জমিটি দেখাশোনা করতেন। কাকার সেই জমি হাতাতে জাল ওয়ারিশন সার্টিফিকেট তৈরি করে তাতে মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের প্রধানের সইও নকল করা হয়েছিল। এরপর জমি নিজের নামে রেকর্ড করতে দেগঙ্গার বিএলআরও অফিসে জমা করতেই ঘটে বিপত্তি। পরীক্ষার জন্য জমির আসল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই কীর্তি ফাঁস! জানা যায়, জীবিতই রয়েছেন হিমাংশু দাস।
এরপরই মুম্বইয়ে থাকা হিমাংশু দাসের মেয়ে তনুশ্রী ই-মেল মারফত গোটা বিষয়টি মছলন্দপুর ১ পঞ্চায়েতের প্রধান কল্পনা বোসের কাছে জানান। নড়েচড়ে বসে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। খতিয়ে দেখতেই ধরা পড়ে পঞ্চায়েতের প্যাড, প্রধানের স্বাক্ষর-সহ স্ট্যাম্প জালিয়াতি করার ঘটনা। শুক্রবার পঞ্চায়েতের তরফে এনিয়ে গোবরডাঙা থানায় অভিযোগ জানালে গ্রেপ্তার হয় অভিযুক্ত। ধৃতকে শনিবার বারাসত আদালতে পেশ করা হলে দু'দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। পঞ্চায়েত প্রধান কল্পনা বোসের বক্তব্য, ''শুক্রবার মুম্বই থেকে তনুশ্রী দাস নামে এক মহিলা মেল করে জানায়, হিমাংশু দাসের মেয়ে হিসেবে তিনি ওয়ারিশ। অথচ ভাইপোর নামে পঞ্চায়েতের থেকে ওয়ারিশন সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখলে জানতে পারি, গোটা ঘটনাটি সমীর দাসের জালিয়াতি।''