সম্যক খান, মেদিনীপুর: ‘দিদিকে বলো’তে অভিযোগ জানিয়ে আবারও স্কুলে ভরতির সুযোগ পেল জঙ্গলমহলের ন’জন কিশোরী। এলাকার জুনিয়র হাইস্কুল থেকে পাশ করে শালবনী নিচুমঞ্জরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে ভরতি হতে গিয়েছিল তারা। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ ভরতি নেয়নি তাদের। এরপরই স্থানীয় এক শিক্ষক নেতার মাধ্যমে তারা ‘দিদিকে বলো’তে অভিযোগ জানান। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই নেওয়া হয় ব্যবস্থা। বুধবারই জেলা শিক্ষা দপ্তর থেকে এক নির্দেশিকা জারি করে শালবনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বাসবী ভাওয়ালকে জানিয়েছেন ওই ন’জন ছাত্রীকে ভরতি নিতে। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার স্কুলে নোটিস দিয়ে ওই ন’জন ছাত্রীকে আগামী শনিবার ভরতি হতে বলেছেন।
ওই ন’জন ছাত্রী স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন জুনিয়র হাই স্কুলে পড়ত। অষ্টম শ্রেণিতে ভরতি হয়ে যাওয়ার পর তারা শালবনী নিচুমঞ্জরী স্কুলের ফর্ম তুলেছিল নবম শ্রেণিতে ভরতি হওয়ার জন্য। কিন্তু তাদের ভরতির তালিকায় নাম বেরোয়নি। বিষয়টি জানতে পারেন মেদিনীপুর সদর মহকুমার তৃণমুল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক তন্ময় সিংহ। তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রথমে স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক চন্দন খুটিয়া এবং জেলা স্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কাজের কাজ না হওয়ায় ‘দিদিকে বলো’তে বিষয়টি জানান। পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভান্স সেলেও অভিযোগ জানান।
[আরও পড়ুন: ‘কেউ অশান্তি করতে এলে গরুর মতো পেটান’, নয়া নিদান অনুব্রতর]
তন্ময়বাবু বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজে ড্রপ আউট রোধে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। চালু করেছেন স্বপ্নের কন্যাশ্রী প্রকল্প। আর সেই কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে ওই গরিব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কয়েকজন ছাত্রী বঞ্চিত হচ্ছে দেখে ‘দিদিকে বলো’তে জানাই।” এখন তারা ভরতি হতে পারবে জেনে খুশি তিনি। এদিকে শালবনী নিচুমঞ্জরীর প্রধান শিক্ষিকা বাসবীদেবী বলেছেন, “শ্রেণিকক্ষে স্থান সংকুলানের অভাবেই বেশ কিছু ছাত্রীকে ভরতি নিতে পারছিলাম না। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। নবম শ্রেণিতে এই মুহূর্তে তিনশো জনেরও বেশী ছাত্রী ভরতি আছে। তিনটি বিভাগের প্রতিটিতে একশোর বেশী ছাত্রী আছে। বেশী ছাত্রী উপস্থিত হলে তাদের ক্লাসরুমে জায়গা হয় না। ক্লাসের বাইরে শতরঞ্জি পেতে বসতে দিতে হয়। পরীক্ষাও ওইভাবে নিতে হয়। নবম শ্রেনীতে এ বছর ভরতি হতে চেয়ে ৮২ জন ফর্ম তুলেছিল। ঠিক হয় যে একাধিক বিষয়ে যারা ফেল করেছে তাদের এখানে ভরতি নেওয়া হবে না। তাদেরকে পাশাপাশি অন্যান্য স্কুলে ভরতি হতে বলা হয়। এরকম ১৪ জনকে ভরতি নেওয়া হয়নি। এই নিয়মের জেরে আমাদের নিজেদের স্কুলেরও ফেল করা ২৫ জন ছাত্রীকে ভরতি নেওয়া হয়নি। যেখানে বসার জায়গাই নেই, সেখানে কোনও না কোনওভাবে রাশ টানতেই হত। যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছিল।” এখন ফের শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা আসায় ওই ন’জনকে ভরতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।
The post স্কুলে ভরতিতে সমস্যা, ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করেই সুযোগ পেল জঙ্গলমহলের ৯ ছাত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.
