শান্তনু রায় ও রাজ কুমার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার: সারিন্দার ছড়ের টানে পল্লিগীতির সুর। যুগের পর যুগ ধরে সেই সুর তুলেই এবার ‘পদ্মশ্রী’ (Padmasree) সম্মানে ভূষিত জলপাইগুড়ির শতায়ু সংগীতশিল্পী মঙ্গলাকান্ত রায়। বুধবার ঘোষণা হয়েছে ‘পদ্ম’ সম্মানের তালিক। মঙ্গলাপ্রাপ্তি রায়ের পদ্মশ্রী প্রাপ্তির খবর পেতেই সকাল থেকে গুণমুগ্ধদের ভিড় জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ির ধওলাগুড়ি গ্রামে। বয়স পেরিয়েছে ১০০ বছর। এতদিন বাদে তিনি যথাযোগ্য সম্মান পেলেন বলে মনে করছেন তাঁর অনুরাগীরা।
[আরও পডুন: সাধারণতন্ত্র দিবসে বড় ধাক্কা বিজেপির, দল ছাড়লেন ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী]
তাঁর বাদ্যযন্ত্র, সুর পদ্ম পুরস্কার পাওয়ায় খুশি শতায়ু শিল্পী নিজেও। চরম দারিদ্র তাঁকে এতদিন কষ্ট দিলেও যন্ত্র তা পুষিয়ে দিয়েছে। সুরের খেলা ভুলিয়ে দিয়েছে সব যন্ত্রণা। কিশোর বয়স থেকে লুপ্তপ্রায় বাদ্যযন্ত্র সারিন্দাকে সঙ্গী করে বেড়ে উঠেছেন মঙ্গলাকান্ত রায়ের। সারিন্দা বাদ্যযন্ত্রে পাখির ডাক হুবহু নকল করতে পারেন তিনি। তাঁর কাছ থেকে সারিন্দা শিখেছেন বহু লোকশিল্পী। এক হাজার টাকা সরকারি শিল্পী ভাতা দিয়ে চলে সংসার। এক বেলা খাবার জোটে, তো আরেক বেলা না খেয়ে দিন কাটে মঙ্গলাকান্তর। ভাঙা ঘরে থাকেন তিনি। সরকারি ঘর পাবেন বলে আশ্বাস মিলেছিল পঞ্চায়েত থেকে। তবে ঘর মেলেনি। আজ, এমন সুদিনে আত্মীয়,পরিজন, প্রতিবেশীদের দাবি, এবার অন্তত মানুষটির পাশে দাঁড়াক সরকার।
অন্যদিকে, পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়ে উত্তরবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করেছেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) টোটো পাড়ার বাসিন্দা ধনিরাম টোটো। বিসিডবলু ডিপার্টমেন্টের অর্থাৎ অনগ্রসর শ্রেণি উন্নয়ন বিভাগের আলিপুরদুয়ার জেলায় সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অফিসার ৫৯ বছরের ধনিরাম টোটো(Dhaniram Toto)। টোটো জনজাতির টোটো ভাষার হরফ তৈরি-সহ পৃথিবীর আদিম জনজাতি টোটোদের শিক্ষা সংস্কৃতি নিয়ে অনেক কাজ করেছেন। বর্তমানে টোটোপাড়াতেই সোশ্যাল ওয়েল ফেয়ার অফিসার পদে কর্মরত তিনি।
টোটো ভাষায় হরফ তৈরি করে সারা ফেলে দেওয়া আলিপুরদুয়ার জেলার ভুটান সীমান্তে টোটোপাড়ার বাসিন্দা ধনিরাম টোটোর পদ্মশ্রী পাওয়ার খবরে টোটো জনজাতির মানুষজনের মধ্যে খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। তবে পদ্মশ্রী পাওয়ার খবর তিনি এখনও জানেন না বলে জানিয়েছেন। তবে ভারত সরকারের তরফ থেকে তাঁর কাছ থেকে কিছুদিন আগেই বায়োডাটা চাওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।