মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। আর তাতেই আশায় বুক বেঁধেছেন হাওড়ার শ্যামপুরের ইটভাটার মালিকরা। এখন ওই এলাকায় ভাটার ইট তেমন বিক্রি হয় না। আর্থিক সমস্যাতেও ভুগছেন বহু মালিক-শ্রমিক। সরকারের টাকায় নতুন বাড়ি তৈরি হলে সেই ইটের চাহিদা বাড়বে। এমনই মনে করছেন তাঁরা।
শ্যামপুরে প্রায় দেড়শো ইটভাটা রয়েছে। কিন্তু গত পাঁচবছর ধরে বেশিরভাগ ইটভাটাই লোকসানে চলছে। অনেকগুলি আবার ধুঁকছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে একাধিকবার ইটভাটার মালিকদের আর্থিক সমস্যার মধ্যেও পড়তে হয়েছিল। যাও বা ইট বিক্রি হত, তার অনেকটাই কমে গিয়েছে গত দুই-আড়াই বছরে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
২০২৩ সালে কেন্দ্রের মোদি সরকার আবাস যোজনা প্রকল্পে টাকা দেওয়ার কথা বলায় খুশি হয়েছিলেন ইটভাটার মালিকরা। বিক্রি হবে ভেবে অনেক ইট তৈরিও হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার টাকা না দেওয়ায় সেই আশা কার্যত মাঠে মারা গিয়েছিল। প্রচুর ইট মজুতও রয়ে যায় সেসময়। এবার রাজ্য সরকার নিজেই আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি দেওয়ার ঘোষণা করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা রেখেছেন। তিনি এই গরিব মানুষদের অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যে ৬০ হাজার টাকা করে প্রথম কিস্তির টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাতেই আশায় বুক বাঁধছেন শ্যামপুরের ইটভাটার মালিকরা। শ্যামপুরের ইটভাটা মালিক সংগঠনের অন্যতম কর্তা তন্ময় শী বলেন, "আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই এই সিদ্ধান্তের জন্য। আমরা আশাবাদী আমাদের ব্যবসা বাড়বে। ইটশিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষরাও রোজগার পাবে। বিশেষত আমাদের শ্যামপুরের অর্থনীতির আরও উন্নতি হবে।"
তন্ময়বাবু আরও বলেন, "এমনিতেই শীতকালে আমরা ইট তৈরি করে রাখি। এবারে যেহেতু প্রচুর বাড়ি তৈরি হবে, তাই চাহিদা ও জোগানের সামঞ্জস্য রাখার জন্য আরও বেশি ইট তৈরি করছি। এতে সামগ্রিকভাবে রাজ্যের অর্থনীতির উন্নতি হবে। শ্যামপুরে তো হবেই।" ইটের পাশাপাশি সিমেন্টের চাহিদাও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজমিস্ত্রি, রংমিস্ত্রিদের কাজও আরও বাড়বে। সেই আশা করা হচ্ছে। শ্যামপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও তন্ময় কাজি বলেন, "ইটভাটার মালিকদের নিয়ে বৈঠকে করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সবটা যাতে ঠিক থাকে, সে ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলব।