সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, টাকার দিকে না তাকিয়ে যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবা দিতেই হবে। তাঁর সেই নির্দেশ কতটা যথাযথভাবে মেনে চলা হচ্ছে, তা নজরদারির অধীন। তবে অনেক বেসরকারি হাসপাতালই যে তা মানছে না, দুর্গাপুরের ঘটনাই তার প্রমাণ। রোগীকে ভরতি করার পর টাকা জমা দিতে দেরি হচ্ছিল। তাতেই রোগীর চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে উত্তপ্ত হাসপাতাল। রাতে সেখানে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
দুর্গাপুরের কালীগঞ্জের বাসিন্দা নাসিম মণ্ডল পরিবারের অভিযোগ, ওই বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা বাবদ বিলের টাকা জমা করতে দেরি হওয়ায় হাসপাতালের এমারজেন্সির সামনে রোগীকে বসিয়ে রাখা হয়। সেই সময় নাসিম মণ্ডলের শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা শুরু হয়। রোগীর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেন যাতে তাঁকে তাড়াতাড়ি অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই অনুরোধে কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। সেই কারণেই নাসিমের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ।
[আরও পডুন: গাফিলতি নাকি প্রযুক্তিগত ত্রুটি? নির্মীয়মাণ ফরাক্কা ব্রিজ ভাঙায় কাঠগড়ায় ঠিকাদার সংস্থা]
এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতালের সামনেই মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। তা নিয়ে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে রোগীর পরিবার পরিজনদের বচসা শুরু হয়। ক্ষুব্ধ রোগীর পরিজনেরা হাসপাতালে সামান্য ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
এ মাসের ১৩ তারিখ দুর্গাপুরে একটি প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হোল্ডারদের বা দুঃস্থ রোগীদের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। অন্যথা হলে থানা বা জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের হওয়ামাত্র অভিযুক্ত হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এমনকী ভবিষ্যতে তাদের লাইসেন্স বাতিলও করা হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির পরও এই বেসরকারি হাসপাতালের এই অমানবিক আচরণের সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে।
[আরও পডুন: গাফিলতির জেরে হুগলিজুড়েই দূরবস্থা পুলকার পরিষেবার, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা]
The post বিল মেটাতে দেরি হওয়ায় চিকিৎসা বন্ধের অভিযোগ, রোগীর মৃত্যুতে হাসপাতালে ভাঙচুর appeared first on Sangbad Pratidin.
