সৌরভ মাজি, বর্ধমান: হিমঘরে রাখা আলু চাষির অজান্তেই বিক্রি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে শুক্রবার উত্তেজনা ছড়ায় মেমারি ২ ব্লকের পাহারহাটির একটি হিমঘরে। হিমঘর কর্তপক্ষের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বেশ কয়েজন চাষি। পরে বিডিও-র কাছে নালিশ জানান ওই চাষিরা। বিডিও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিন ওই হিমঘরে আলু নিতে গিয়েছিলেন বেশ কয়েজন চাষি। হিমঘর কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়ে দেন ওই আলু বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিমঘরে আলু রাখার সময়সীমা রয়েছে তা সত্ত্বেও তার আগেই আলু বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। সৌরভ দত্ত নামে এক চাষির ২৫ বস্তা আলু মজুত ছিল এই হিমঘরে। ২টি বন্ডে সেই আলু মজুত করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "কয়েকদিন আগেও হিমঘরে এসেছিলাম। তখন ফিরিয়ে দিয়েছিল। বলেছিল পরে নিয়ে যেতে। এদিন সেই আলু নিতে আসলে বলা হয় বিক্রি করে দিয়েছে।" আরও বেশ কয়েকজন চাষির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
যদিও চাষিদের অভিযোগ মানতে নারাজ হিমঘর কর্তৃপক্ষ। হিমঘরের ম্যানেজার বাসুদেব রায় দাবি করেন, "চাষিদের সঙ্গে আমাদের বন্ডের চুক্তি ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। হিমঘরে অধিকাংশ আলু তার আগেই বেরিয়ে গিয়েছে। মাত্র ৪ হাজার প্যাকেট ছিল। সেই আলু বের করে নেওয়ার জন্য আমরা এলাকায় মাইকিং করেছিলাম। তারপরেও কেউ কেউ আলু নিয়ে যাননি। তাই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।" তিনি জানান, ওই আলু বাছাই করে বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া গিয়েছে তা থেকে হিমঘরের ভাড়া কেটে নিয়ে চাষিকে দেওয়া হবে। যদিও চাষিরা অভিযোগ করেন এলাকায় কোনও মাইকিং করা হয়নি। একইসঙ্গে সরকারি সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। তার পরেও কীভাবে আলু বিক্রি করে দিতে পারে।
হিমঘর কর্তৃপক্ষের দাবি, কমপক্ষে ৩০ হাজার প্যাকেট আলু না থাকলে হিমঘর চালু রাখার খরচে পোষায় না। মাত্র ৪ হাজার প্যাকেট আলুর জন্য হিমঘর চালু রাখা যায় না। তাই চাষিদের আলু বের করে নিতে বলা হয়েছিল। তা তাঁরা করেননি। হিমঘর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা করেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় ওই চাষিরা বিডিও কার্যালয়ে যান। তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানান। বিডিও বিশাখ ভট্টাচার্য বলেন, "চাষিদের অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি কৃষিজ বিপণন দপ্তরকে জানানো হবে। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।"