shono
Advertisement
Raiganj

বাড়িতেই সায়েন্স পার্ক! ইচ্ছাপূরণ রায়গঞ্জের দত্ত দম্পতির

দোতলায় আয়না ঘরে ঢুকলেই কাচের বর্ণময় জাদুতে হারিয়ে যাবে দর্শক।
Published By: Subhankar PatraPosted: 02:11 PM Dec 08, 2024Updated: 02:11 PM Dec 08, 2024

শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: দোতলার আয়না ঘরে দাঁড়ালেই মুহূর্তে অসংখ্য প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে আপনার। বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে 'মাল্টিপল রিফ্লেকশন'। কিংবা সমানাকৃতি সারি সারি কাচের আয়নার পাশ দিয়ে হেঁটে এগিয়ে গেলে মনে হবে আপনি এগোচ্ছেন না বরং পিছোচ্ছেন। রকেট সায়েন্স নয়, প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে মিশে থাকা বিজ্ঞানের 'মন্দির'। সেখানে ঢুকে পড়তে পারলেই হাতে কলমে অনায়াসেই বিজ্ঞানের নিরন্তর পথের উৎসের সন্ধান পেতে পারে কৌতূহলী পড়ুয়ারা।

Advertisement

রায়গঞ্জ শহর ছাড়িয়ে আড়াই কিলোমিটার দূরে উদয়পুর। অদূরে বয়ে গিয়েছে কুলিক নদী। উদয়পুরের গলির রাস্তার ধারে দত্ত পরিবারের দোতলা দুধসাদা বাড়ির 'সায়েন্স পার্কে' কোণায় কোণায় ছড়িয়ে পড়েছে বিজ্ঞানের ম্যাজিক। চক্ষু বিশেষজ্ঞ অশোক দত্ত ও তাঁর স্ত্রী সংহিতা দত্ত যৌথ উদ্যোগে দীর্ঘ বছরের যাপিত স্বপ্ন 'ছবিঘরে' আলো মেলল 'সায়েন্স পার্ক'। সূচনার মুহূর্তে আড়াই বিঘা এলাকাজুড়ে নির্মিত বিজ্ঞানের উদ্যানে হাজির ছিলেন রায়গঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান পরেশাত্মা নন্দজি মহারাজ, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণকুমার শর্মা ও রায়গঞ্জ মহকুমাশাসক কিংশুক মাইতি। সেই সঙ্গে ছিলেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক ভাগ্যলক্ষ্মী মহাপাত্র এবং পরিমল দাস-সহ রায়গঞ্জের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা।

কেন এই পরিকল্পনা? দত্ত দম্পত্তি জানাচ্ছেন, অশোকবাবুর বাবার প্রেরণা ও আর তাঁর স্ত্রী সংহিতা দত্তকে দেওয়া আবদুল কালামের আশীর্বাদকে পাথেয় করে বিজ্ঞানকে সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার স্বার্থে এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আঠারো বছর আগে মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট গ্রাজুয়েটে প্রথম হওয়ায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কালামের হাত থেকে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন সংহিতা দত্ত। মাথায় হাত রেখে জীবনে শিক্ষার স্বার্থে সংহিতাকে বড় কিছু করার আশীর্বাদ করেছিলেন 'মিসালই ম্যান'।

প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা সংহিতা দত্ত বলেন, "সেই থেকে একটা স্বপ্ন দেখতাম বিজ্ঞান শিক্ষাপ্রসারের জন্য কিছু কাজ করব। বিয়ের পর আজ স্বপ্ন বাস্তবের পথে।" চক্ষু বিশেষজ্ঞ অশোক দত্ত বলেন, "আমার বাবা বলেছিলেন, আমি তোমাকে ভালো কাজের জন্য একটি জায়গা দিতে পারি, তবে শর্ত ছিল জায়গা বিক্রি করা চলবে না। কিছু করতে পারলে নেওয়া যাবে না কোনও পয়সাও। তার পরই মা ছবি দত্তের নামে 'ছবিঘর' বাড়িতে 'সায়েন্স পার্ক' তৈরি করলাম।"

দোতলায় আয়না ঘরে ঢুকলেই কাচের বর্ণময় জাদুতে হারিয়ে যাবে দর্শক। প্যাডেল বোট, টেলিস্কোপে চোখ রেখে 'দেখব এবার জগৎটা'র ইচ্ছেপূরণ করতে পারেন উৎসুক জনতা। 'সায়েন্স পার্ক' পর্যটকদের সামনে পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলে ধরতে তিনজন গাইড নিযুক্ত করা হয়েছে। তবে সতর্কবাণী শোনা গিয়েছে চিকিৎসক অশোকবাবুর গলায়। তাঁর কথায়, "স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা আসলে তাঁদের সহযোগিতা করা হবে। তবে কোনও আড্ডা, বিনোদনের জন্য এই পার্ক নয়।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • দোতলার আয়না ঘরে দাঁড়ালেই মুহূর্তে অসংখ্য প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে আপনার। বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে 'মাল্টিপল রিফ্লেকশন'।
  • কিংবা সমানকৃতি সারি সারি কাচের আয়নার পাশ দিয়ে হেঁটে এগিয়ে গেলে মনে হবে আপনি এগোচ্ছেন না বরং পিছোচ্ছেন।
  • সেখানে ঢুকে পড়তে পারলে হাতে কলমে অনায়াসেই বিজ্ঞানের নিরন্তর পথের উৎসের সন্ধান পেতে পারে কৌতূহলী পড়ুয়ারা।
Advertisement