নব্যেন্দু হাজরা: ভরা বর্ষার ঝকঝকে নীল আকাশেই কি লুকিয়ে আছে মেঘে ঢাকা শরতের আশঙ্কা?
এই মুহূর্তে দুর্বল মৌসুমী বায়ু চালিয়ে খেলতে পারছে না, পরিণামে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা (Monsoon) ঝিমিয়ে পড়েছে। আপাতত ভারী বৃষ্টির বিশেষ সম্ভাবনা নেই। জুনের শুরু ইস্তক এ তল্লাটে বৃষ্টির ঘাটতি ঠেকেছে ৪৫ শতাংশে। তবে আবহবিদদের পর্যবেক্ষণ, জুলাইয়ে কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি পেলেই এই ঘাটতি পুষিয়ে যেতে পারে। এবং যেহেতু এবার বর্ষার বৃষ্টি অনেক দেরিতে শুরু হচ্ছে, তাই তা অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত চললে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
কিন্তু এবার দুর্গাপুজো (Durga Puja) তো অক্টোবরের গোড়ায়! ফলে বৃষ্টিভেজা শারদীয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত (১ জুন থেকে) দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি ৪৫%। উত্তরবঙ্গে ৩% বেশি বৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আগামী সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গের উপরের পাঁচ জেলায় (দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার) বৃষ্টি হবে, মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। তবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে এখনই ভারী বৃষ্টির কোনও আশা নেই। বৃষ্টি হলেও তা ছোট ছোট স্পেলে হবে। তা-ও মূলত উপকূলে।
কলকাতায় টানা বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস নেই। হাওয়া অফিসের কর্তারা জানাচ্ছেন, অনেক বছর মরশুমের প্রথম দিকে বৃষ্টির ঘাটতি থাকলেও পরের দিকে, মানে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পরপর কয়েকটি স্পেলে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় শেষমেশ ঘাটতি পুষিয়ে গিয়েছে। এবছরও তেমনটা হতে পারে। সেখানেই পুজোয় ভাসার প্রশ্ন। বস্তুত পুজোর সময় কলকাতায় বৃষ্টি হতেই পারে।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের শহিদ দিবস হোক ভারচুয়ালি, করোনার বাড়বাড়ন্তে হাই কোর্টে মামলা চিকিৎসকের]
দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এবার মোটামুটি ঠিক সময়ে প্রবেশ করেছে। কিন্তু মৌসুমী বায়ু শক্তিশালী না হওয়ায় কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ এ যাবৎ সেভাবে বৃষ্টি না পেলেও আবহবিদদের বক্তব্য, বঙ্গোপসাগরের উপর তাপমাত্রা বেশি থাকায় দক্ষিণবঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প প্রবেশ করবে। যার জেরে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে আগামী দিনে। তাঁরা জানাচ্ছেন, নিয়ম মেনে ১০ অক্টোবর বর্ষা বিদায় নেয়। কিন্তু অক্টোবরের গোড়ায় তেমন একটা বৃষ্টি হয় না। এবার যেহেতু ভারী বৃষ্টি শুরু হতে আগস্ট গড়িয়ে যাবে, তাই অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টি চলতে পারে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। আর তাতেই মাটি হতে পারে পুজো।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফে অবশ্য স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পুজোর আবহাওয়া কেমন থাকবে, এখনই তা বলা সম্ভব নয়। তবে বৃষ্টির ঘাটতি শেষ পর্যন্ত নাও থাকতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের কথায়, “কয়েকটা স্পেলে ভারী বৃষ্টি হলেই আর ঘাটতি থাকবে না দক্ষিণবঙ্গে। এখান থেকে বর্ষা বিদায় নেয় অক্টোবরের ১০ তারিখ। ততদিন বৃষ্টি চললে পুজোর মধ্যে হতেও পারে।”