shono
Advertisement
Rampurhat

পুলিশের বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগ, পোস্টার দিয়ে আম দরবার ডাকলেন নলহাটির এসডিপিও

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু নলহাটি নয়, বোলপুরেও এমন দরবার খোলা হবে।
Published By: Subhankar PatraPosted: 01:57 PM Nov 19, 2024Updated: 03:04 PM Nov 19, 2024

স্টাফ রিপোর্টার, সিউড়ি: তিনি জনপ্রতিনিধি নন। প্রশাসনিক পদাধিকারী। তবুও বসবেন আম দরবারে। শুনবেন মানুষের কথা। নলহাটি থানার ভিতরে রীতিমতো ফ্লেক্স ছাপিয়ে সেই পোস্টার দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে নলহাটি থানা এলাকার মানুষের অভিযোগ শুনতে সেই দরবারে বসবেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গোবিন্দ শিকদার। সাধারণ মানুষ খুশি। তবে কিছুটা হলেও ভয়ে কাঁটা নিচুতলার পুলিশকর্মীরা। কে তাঁদের কারও বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও অভিযোগ করে বসেন মহকুমা পুলিশকর্তার কাছে।

Advertisement

উল্লেখ্য, নলহাটি থানার ওসি সুমিত মণ্ডল-সহ বেশ কিছু পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকা থেকে লাগাতার নানা অভিযোগ আসছিল। প্রতিবাদে মানুষ পথ অবরোধ করে। এমনকি, শনিবার এক অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়ার পথে পরিবারের মেয়েরা গাড়ি আটকে বসে পড়েন। ইতিমধ্যে ওই ঘটনায় জনরোষ সামাল দিতে নলহাটি থানার দুই এএসআই দীপঙ্কর বারিক ও চৌধুরি সামশুল আরফিনকে দ্রুত বদলির নির্দেশ দেন বীরভূমের পুলিশ সুপার। যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের একজনকে বোলপুর থানায়, অন্যজনকে আমোদপুর ফাঁড়িতে যোগ দিতে বলা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, "সব ধরণের অভিযোগ শুনবেন মহকুমা আধিকারিক। তবে শুধু নলহাটি নয়, বোলপুরেও এমন দরবার খোলা হবে।"

উল্লেখ্য, নলহাটি থানার ওসির বিরুদ্ধে নানা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা সরাসরি ওই থানার ছোটবাবু আরফিনের নাম করে সেই অভিযোগ করেন। প্রতিবাদে রবিবার বাহাদুরপুর পাথর শিল্পাঞ্চলের পথে কোঠাতলায় পথ অবরোধ করেন পরিবহণ ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে থানাজুড়ে যে দালালাচক্র গড়ে উঠেছে তার প্রতিবাদ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শাসক দল থেকে বিরোধী, সকলেই সরব। এলাকার বিধায়ক রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ পর্যন্ত পুলিশের জন্য এলাকায় জনরোষের অভিযোগ জানান জেলা নেতৃত্বের কাছে। রাজ্য সরকার যেখানে পুলিশকে মানবিক, সামাজিক বন্ধু হওয়ার আবেদন করছে, সেখানে নলহাটি থানায় গিয়ে বিচার না পাওয়ার অভিযোগ ক্রমশ বাড়ছে। ওসি সুমিত মণ্ডল মানুষের সঙ্গে সঠিক ব্যবহার করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি চরমে ওঠায় জেলা পুলিশ কর্তারা এবার থানাতেই আমদরবার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গোবিন্দ শিকদার সেই দরবারে উপস্থিত থাকবেন। থানার ভিতর পোস্টারে জানান হয়, "যে কোনও সমস্যা বা অভিযোগের ক্ষেত্রে, আপনি সরাসরি রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের সাথে দেখা করতে পারেন।" সেই পোস্টারে উল্লেখ আছে প্রতি ইংরেজি মাসের তৃতীয় শনিবার তিনি বিকাল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত নলহাটি থানায় বসবেন।

উল্লেখ্য, গত দুদিন এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরমে পৌঁছায়। তার জেরে এলাকায় অবৈধ বালি পাচার, থানা এলাকা জুড়ে অবৈধ পাথরের মজুত যা গোলা নামে পরিচিত তা বন্ধ আছে। পুলিশ সুপার দাবি করেন, "থানার ওসি সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলেই কিছু লোকের অসুবিধা হচ্ছে। আমার কাছে থানা এলাকায় অবৈধ পাচারের কোনও অভিযোগ নেই।" যদিও এলাকাবাসীরা জানান, স্থানীয়ভাবে নদী থেকে বালি তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন ওসি। কিন্তু ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রামের ভিতর দিয়ে অবাধে বালি পাচার চলছে। তার ছবি তাঁদের কাছে আছে। সেক্ষেত্রে সোজা সড়ক পথে না গিয়ে বাহাদুরপুর -বানিওরের ভিতর দিয়ে ভাটরা বসন্তপুর, সংকেতপুর হয়ে রাতে পুলিশের সঙ্গে চুক্তি করেই বালি পাচার হচ্ছে। এছাড়া পাথরের অবৈধ মজুতের গোলা আছেই

বিধায়ক রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ বলেন, "নলহাটি থানা নিয়ে আমি জেলা নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছি।" বিজেপির জেলা-সহ সভাপতি দীপক দাস বলেন, "পুলিশ কেমন পরিষেবা দেয় এলাকার মানুষের বিক্ষোভ তার প্রমাণ। থানার ভাল-মন্দ, পুলিশের কাজের মান এখন পরিষেবার উপর নির্ভর করে না। পাথর শিল্পাঞ্চল থেকে যে যত টাকা পৌঁছে দিতে পারেন, তিনি তত ভাল অফিসার।"

সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানান, "সাধারণ মানুষ পথে নামছে। তাদের ক্ষোভ পুলিশের বিরুদ্ধে। রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে নলহাটির মোড়ে যেভাবে পুলিশ টাকা তোলে, রাস্তায় চেয়ার নিয়ে বসে থাকে, তাতে নলহাটির মানুষ যেমন ভুক্তভোগী, নলহাটির বাইরের মানুষের চরম দুর্গতি চলে।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • নলহাটি থানা এলাকার মানুষের অভিযোগ শুনতে দরবারে বসবেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গোবিন্দ শিকদার।
  • নলহাটি থানার ভিতরে রীতিমতো ফ্লেক্স ছাপিয়ে সেই পোস্টার দেওয়া হয়েছে।
  • প্রতি ইংরেজি মাসের তৃতীয় শনিবার তিনি বিকাল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত নলহাটি থানায় বসবেন।
Advertisement