shono
Advertisement

দুর্ঘটনায় মৃত বাবা-মা, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ঘোর কাটছে না একরত্তির

দাদুর কাছে বাবা-মাকে ফিরিয়ে দেওয়ার আরজি ছোট্ট সূর্যাশিসের। The post দুর্ঘটনায় মৃত বাবা-মা, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ঘোর কাটছে না একরত্তির appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:20 AM Apr 30, 2019Updated: 09:20 AM Apr 30, 2019

শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি : মা কোথায়? কোথায় বাবা? হাসপাতালের বেডে শুয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে দাদুকে প্রশ্নটা করেছিল ৬ বছরের সূর্যাশিস। শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি আশিস কর। কিন্তু, নাতির সামনে যে কান্নাকাটি করা যাবে না। তাই মন শক্ত করে নাতির মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললেন, তোমার মায়ের যে চিকিৎসা চলছে। বাবারও। শিশুটি জানে না যে তার মা-বাবা আর কোনওদিন ফিরবেন না।

Advertisement

রবিবার রাতে সিকিমের পাহাড়ি রাস্তা ধরে যখন গাড়িটি ফিরছিল, মাকে জড়িয়ে গুটিসুটি হয়ে বসেছিল শিশুটি। রাস্তায় একটি মিলিটারি ট্রাক খারাপ হয়ে যাওয়ায় পাহাড়ি রাস্তায় যানজট। ফলে ফিরতে রাত হয়ে যায়। তার উপর বৃষ্টির কারণে ভেজা রাস্তা। পিছল রাস্তা থেকে গাড়িটি খাদে গড়িয়ে পড়ার আগে থেকেই মায়ের কোল ঘেঁষে ছিল সে। তাই পড়ার পরও তার চোট অনেকটাই কম লাগে। প্রচণ্ড কুয়াশা ও বৃষ্টির জন্য উদ্ধার করতে সময় লাগে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের। এভাবে সোমবার সকাল পর্যন্ত খাদের নিচে বৃষ্টি ও ঠান্ডার মধ্যে পড়ে ছিলেন আরোহীরা। পড়ে ছিল ছোট্ট সূর্যাশিসও। হারিয়ে ফেলেছিল জ্ঞান। উদ্ধারকারী দল যখন তাকে খুঁজে পায়, তখন ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে সে। অতি সাবধানে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধার করার সময়ই বোঝা যায় যে, মৃত্যু হয়েছে সূর্যাশিসের বাবা সন্দীপ কর ও মা সোমা করের।

[আরও পড়ুন-ভাটপাড়া উপনির্বাচনের মনোনয়ন পেশ মদন মিত্রর, ভিন্ন সাজে নজর কাড়লেন]

গ্যাংটকে হাসপাতালে চিকিৎসার পর শিশুটি অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠলেও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তার উপর যখনই জ্ঞান এসেছে, খুঁজে চলেছে তার মা-বাবাকে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা তাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। তার ফাঁকেই মাঝে মাঝে কেঁদে উঠেছে সে। সূর্যাশিসের দাদু আশিস কর তাঁর কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে ছুটে গিয়েছেন গ্যাংটকের হাসপাতালটিতে। দাদুকে দেখে স্বস্তি পেয়েছে সে।

[আরও পড়ুন- বিয়ের বেশেই ভোটের লাইনে, দায়িত্ব পালনে অন্যদের উৎসাহ দিলেন দুই নববধূ]

এদিন আশিসবাবু জানান, তিনি হাসপাতাল থেকে নাতিকে ছাড়িয়ে হোটেলে এসেছেন। শিশুটি দাদুকে বারবার জিজ্ঞাসা করছে তার মা, বাবা কোথায়? চোখের জল চেপে রেখে বৃদ্ধ ভুলিয়ে চলছেন শিশুটিকে। মঙ্গলবারই চেষ্টা করছেন বাগডোগরায় নেমে যাওয়ার। বিমানে করে মঙ্গলবারই নাতিকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে চান তিনি।

[আরও পড়ুন-গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল সন্ন্যাসীও, ভোট দিলেন ইসকন মন্দিরের প্রধান]

উত্তর কলকাতার শ্যামবাজারের মদনমোহনতলা স্ট্রিটের বাসিন্দা আশিসবাবুর ছেলে সন্দীপ তাঁর স্ত্রী সোমা, স্ত্রীর মামা, মামি, মামাতো ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে দার্জিলিং ও সিকিম বেড়াতে যান। সোমা করের আত্মীয়া মহুয়া পাত্র এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। শ্যামবাজারের বাড়িতে রয়েছেন আশিসবাবুর স্ত্রী ও ভাই। ছেলে ও পুত্রবধূর মৃত্যুর খবর শুনে ভেঙে পড়েছেন আশিস করের স্ত্রী। তাঁদের ছেলে, পুত্রবধূ আর ফিরবে না।কিন্তু, নাতিকে বড় করা, তাকে মানুষ করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ বৃদ্ধ-বৃদ্ধার।

The post দুর্ঘটনায় মৃত বাবা-মা, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ঘোর কাটছে না একরত্তির appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement