জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: তিন ছেলে, স্ত্রীকে নিয়ে সুখে-শান্তির সংসার। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ না থাকলেও দিন চলে যায়। কিন্তু এসআইআরের এমুনারেশন ফর্ম বাড়ি এলেই আকাশ থেকে পড়েছে ওই পরিবার। ফর্ম হাতে পেয়ে ততোধিক হতবাক হয়েছিলেন প্রৌঢ় রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। হবেন নাই বা কেন! এসআইআর ফর্ম জানাচ্ছে, ওই বৃদ্ধের আরও দুই ছেলে আছে। সব মিলিয়ে তাঁর পুত্র সন্তানের সংখ্যা পাঁচ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভা এলাকায়। এই বিষয় জানাজানি হতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চাও।
জানা গিয়েছে, বনগাঁ দক্ষিণ বিধানসভার ১৯১ নম্বর পার্টের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। পেশায় কৃষিজীবী ওই প্রৌঢ়ের ভরা সংসার। স্ত্রী ও তিন ছেলে রয়েছে। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ তেমন না থাকলেও সুখ-শান্তি রয়েছে সংসারে। বাংলায় এসআইআর শুরু হওয়ার পর ওই বাড়িতেও এমুনারেশন ফর্ম আসে। তারপর তথ্য-তালাশ পেতেই হতবাক হন রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস। দেখা যায় তাঁর কেবল তিন সন্তান নয়। আরও দুই সন্তানও রয়েছে। তাঁদের নাম রাজু বিশ্বাস ও বিশু বিশ্বাস। অভিযোগ, ওই দু'জন রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে বাবা 'বানিয়ে' ভোটে নামি তুলেছেন।
রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের দাবি, তিনি রাজু ও বিশুকে চেনেন না। অভিযুক্ত দু'জনের ওই এলাকায় বাড়িও না। এই বিষয়ে গাইঘাটার বিডিওর কাছে অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। বিডিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে ঘটনা জানাজানি হতেই দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোড়। বিষয়টি সামনে আসতেই বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সব্যসাচী ভট্ট। তিনি বলেন, "এটা কীভাবে হল সেটা নির্বাচন কমিশন বলতে পারবে। ওই এলাকার বিধায়ক বিজেপির এবং পঞ্চায়েত সদস্যও বিজেপির। তাঁরা বলতে পারবেন কীভাবে এই ঘটনা সম্ভব।"
পালটা দাবি করেছে বিজেপিও। বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেন, "বাংলায় দীর্ঘদিন তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে। তৃণমূলের যেসব দাদালরা বিভিন্ন অফিসের সামনে থাকে, তাঁরা টাকার বিনিময়ে এইসব করেছিল। এবার এসআইআর হওয়ার ফলে সেসব ধরা পড়ছে।"
