ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: এখনও উত্তপ্ত বেলগাছিয়া। স্থানীয়দের বিক্ষোভে দফায় দফায় অশান্ত হয়ে ওঠে এলাকা। সেখানে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। হাতে আঁচড়ের দাগ দেখিয়ে তাঁর দাবি, "আমাকে রক্তাক্ত করেছে পুলিশ। রক্ত গুছিয়ে রাখলাম।"

সোমবার সকালে ধস বিপর্যস্ত বেলগাছিয়ায় যান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। আগামী তিনদিনের মধ্যে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে বলেই আশ্বাস দেন ফিরহাদ। এদিকে, এদিন দুপুরের দিকে বেলগাছিয়ায় যান শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন শংকর ঘোষ। বিরোধী দলনেতার দাবি, তাঁকে পুলিশ বাধা দেয়। কথা কাটাকাটির মাঝে তাঁকে শারীরিক হেনস্তা করা হয় বলেও অভিযোগ। হাতে আঁচড়ের দাগ দেখিয়ে তাঁর দাবি, "পুলিশ আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। আমাকে রক্তাক্ত করেছে। এই রক্ত গুছিয়ে রাখলাম।"
শুভেন্দুর দাবি, এই হাতেই চোট পেয়েছেন
বেলগাছিয়ার ভাগাড়ের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "২০০ শতাংশ কাজের নমুনা দেখুন। গরিবের কী অবস্থা। খাবার নেই। মিথেন গ্যাস বেরচ্ছে। আরও বড় ঘটনা ঘটবে যদি রাজ্য সরকার উন্নাসিকতা করে।"
এরপর চিকিৎসক সজল ঘোষের হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে বিধানসভায় যান। এদিকে বেলগাছিয়া থেকে বিধানসভায় পৌঁছন শুভেন্দু। বাইরে থেকে আসা চিকিৎসক শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) চিকিৎসা করেন।
কেন বিধানসভার চিকিৎসককে দেখালেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ, হাওড়ার বেলগাছিয়ার ভাগাড়ে ধস নামে। খুব অল্প সময়ে ধস ভয়াবহ রূপ নেয়। পরবর্তীতে ফেটে যায় শিবপুর ও উত্তর হাওড়া কেন্দ্রের জল সরবরাহের মূল পাইপলাইন। চরম সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। উত্তর হাওড়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্ধ হয়ে যায় জল সরবরাহ। এরপর পাশে দাঁড়ায় কলকাতা ও উত্তরপাড়া পুরসভা। ‘নির্জলা’ হাওড়ায় জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হয়। এসবের মাঝেই ওই ভাগাড় সংলগ্ন এলাকায় প্রায় দেড় বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রাস্তায় ফাটল দেখা দেয়। একাধিক বাড়িতেও ফাটল নজরে পড়ে। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো শনিবার বিকেল থেকে নতুন সমস্যা দেখা যায়। জানা যায়, মাটি থেকে বেরচ্ছে মিথেন গ্যাস। পাশেই গঙ্গা, ফলে নদীর জলে মিথেন গ্যাস মেশার সম্ভাবনা তৈরি হয়। যা দুশ্চিন্তা কয়েকগুণ বাড়ায়।
এদিকে, পরিস্থিতি সামাল দিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলে মেরামতির কাজ। শনিবারই শিবপুর-সহ হাওড়ার একাংশে জল সরাবরাহ শুরু হয়। তবে উত্তর হাওড়ার ১৪ টি ওয়ার্ডে মিলছিল না জল। কেএমডিএ ও হাওড়া পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের চেষ্টায় মেরামতির যাবতীয় কাজ শেষ হয় রবিবার। প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার সন্ধেয় গোটা হাওড়ায় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।