সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় হিন্দুদের একজোট হওয়ার বার্তা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। হিন্দুরা একজোট হলে রাজ্যে ২০২৬ সালে বদল সম্ভব। তেমনই দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। আজ রবিবার দুপুরে হলদিয়ায় মিছিল ও সভা করেন তিনি। রাজ্যের সনাতনীদের উপর আক্রমণের অভিযোগে এদিন মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল। শুভেন্দু অধিকারী এর আগে সংখ্যালঘুদের নিশানা করে বক্তব্য রাখছিলেন। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে তৃণমূলের মুসলিম বিধায়কদের চ্যাংদোলা করে বিধানসভার বাইরে ফেলা হবে। সেই 'বিতর্কিত' মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল চলতি মাসেই বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। খাস নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে বিজেপি বিধায়কের দলবদল কিছুটা প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল শুভেন্দু অধিকারীকে। তেমনই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এদিন সেই হলদিয়াতেই মিছিল ও সভা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। নিজের শক্তি দেখিয়ে হিন্দুত্ববাদের তাস খেললেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
সংখ্যালঘুদের আক্রমণ করে বারবার আক্রমণাত্মক হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। 'চ্যাংদোলা' ইস্যুতে দলের অন্দরেই তাঁর বিরুদ্ধে সমালোচনা দেখা দেয় বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও শুভেন্দুর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেননি। দিন কয়েক আগে রাজ্য বিধানসভায় গিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি ও প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষও। তিনিও সংখ্যালঘু ইস্যুতে কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, শুভেন্দুর ওই বক্তব্য যে সমর্থন করেন না, তাও হাবেভাবে দিলীপ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন।
সেই আবহতেই কি এবার আরও হিন্দুত্ববাদের সওয়াল করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা? ২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে হিন্দুদের একজোট হওয়ার ফের বার্তা দিলেন তিনি। এদিন সভামঞ্চ থেকে একাধিকবার হিন্দুদের একজোট হওয়ার বার্তা দিলেন তিনি। "হিন্দুরা একটু দয়া করলেই বাংলায় উলটে দেব আমরা।" সেই কথাই বলেছেন তিনি। হলদিয়ার মঞ্চ থেকে হিন্দুদের কাছে 'অনুরোধ'ও করেছেন তিনি। "২০২৫ সালে দিল্লি জিতেছি। ২০২৬ সালে বাংলা।" সে কথাও বলেন তিনি। তাঁর কথায় উঠেছে, মহাকুম্ভের পূণ্যস্নান প্রসঙ্গও। শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন সাসপেন্ড ছিলেন। তাঁকে বাইরে রেখে রাজ্য সরকার দুটি বিল পাশ করিয়েছে। সেই অভিযোগ করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
দোলে অশান্তির অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারী আজ রবিবার হলদিয়ায় বিজেপির প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন। পুলিশ সেই মিছিলের অনুমতি দিচ্ছিল না বলে অভিযোগ ওঠে। কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা। হাইকোর্ট ক্ষুদিরাম স্কোয়ার থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত মিছিলেন অনুমতি দেয়। মিছিল শেষে ছোট সভা করার অনুমতিও ছিল। 'হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই' স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ডও দেখা যায় মিছিলে।