শেখর চন্দ্র, আসানসোল: জলের তোড়ে ভেসে গেল দামোদরের উপরের বাঁশের সেতু। অথচ পশ্চিম বর্ধমানে বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টি ছাড়াই দামোদরে জলের স্রোত কথা থেকে এল তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। অনুমান, ডিভিসির ছাড়া জলেই অস্থায়ী সেতুর এই অবস্থা। তবে জল ছাড়ার বিষয়ে ডিভিসি কিছু জানায়নি।
বাঁকুড়া এবং বার্নপুরের সংযোগকারী দামোদরের উপর এই অস্থায়ী সেতু অন্যতম ভরসা দুপ্রান্তের মানুষের। সোমবার সকালে দেখা যায়, জলের তোড়ে ওই সেতু প্রথমে দু'টি ভাগ হয়ে যায়। এরপর দুটি ভাগের একটি কিনারা ভেসে যায় দামোদরে। ফি বছর প্রবল বর্ষায় ভেঙে পড়ে দামোদর নদের উপরের সেতুটি। কিন্তু বর্ষার আগেই সেই সেতু উধাও হয়ে যাওয়ায় রহস্য দানা বেঁধেছে। মনে করা হচ্ছে, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির জেরেই এই ঘটনা।
ভেসে গেল দামোদরের অস্থায়ী সেতু। নিজস্ব চিত্র
নিত্যদিন ওই সেতু পারাপার করেন আসানসোলের পুণ্যার্থী ও পর্যটকরা। সেতু পেরিয়ে তাঁরা বাঁকুড়ার বিহারীনাথ পাহাড়ে যান। আবার ওই প্রান্ত অর্থাৎ বাঁকুড়ার শালতোরা ব্লক ও পুরুলিয়ার সাঁতুরি ব্লক থেকে সেতু পারাপার করে বার্নপুর ইস্কো কারখানায় কাজ করতে আসেন শ্রমিকরা। আসানসোলের বিভিন্ন স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েও আসেন পড়ুয়ারা। শাকসবজি বিক্রেতা, ফেরিওয়ালাদের ভরসা ওই অস্থায়ী সেতু। বাঁকুড়ার শালতোরা ব্লকের থেকে বাঁকুড়া সদর অনেক দূর। বরং ওই সেতু ব্যবহার করলে আসানসোল সদর কাছে। তাই ওই এলাকার মানুষের আসানসোল জেলা হাসপাতালও অন্যতম ভরসা। সহজে ও শর্টকাটের জন্য ওই সেতু ব্যবহার করেন দুই প্রান্তের মানুষ।
ভেসে গেল দামোদরের অস্থায়ী সেতু। নিজস্ব চিত্র
ফি বছর বর্ষায় জলের তোরে যখন ভেসে যায় সেতুটি তখন ভরসা খেয়া পারাপার। পাকা সেতুর দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু রাজ্য সরকার কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। অন্যদিকে রাজ্যের সাড়া না পেয়ে ওই এলাকার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল কেন্দ্রীয় জাহাজ, বন্দর ও জলবিভাগ মন্ত্রকের প্রতিনিধি দলকে বার্নপুরে দামোদরের ওই ঘাট পরিদর্শন করিয়েছিলেন। উদ্দেশ্যে জেটি তৈরি করে সেতুর বিকল্প ব্যবস্থা করা। তবে এ পর্যন্ত কোনও স্থায়ী সমাধান মেলেনি। তার মধ্যে নতুন বিপত্তি বর্ষা নামার আগেই ভেসে গেল দামোদরের ওপর ওই অস্থায়ী সেতু।
