স্টাফ রিপোর্টার: চামড়া গুটিয়ে পায়ের জুতো, এলাকাছাড়া করার হুমকির পর আবার জুতোপেটার কথা। আরও একবার হুমকি বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের (Saugata Roy) মুখে। শনিবার ডানলপ মোড়ের সভা থেকে সৌগত বলে দেন, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস যদি নিজেদের নিয়ন্ত্রণ না করে তবে তাদের কেউ জুতোপেটা করলে দুঃখ পাবেন না। এর জবাব দিতে গিয়েও তৃণমূলের কাছেই বিদ্ধ বিজেপি। তৃণমূলের বক্তব্য, সৌগত রায় আসলে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার কথা বলেছেন।
গত কয়েকদিনে পরপর একের পর এক হুমকি দিয়ে চলেছেন সাংসদ সৌগত রায়। শনিবার তিনি বিজেপি নেতাদের নাম করেই বলেন, ‘‘আগে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) অশিক্ষিত ছিল। ক্লাস এইট পাস, ফিডার মিস্ত্রি। আমি ভাবতাম যে, ও যা ইচ্ছে বলে বলুক। কিন্তু এখন দেখছি সুকান্ত মজুমদার, সে বটানির অধ্যাপক হয়েও সমান উগ্র কথা বলছে।’’
এরপরই তাঁর হুমকি, ‘‘সিপিএম, বিজেপি আর কংগ্রেসের যদি কেউ থাকেন, তাঁদের আমি এখানকার তিনবারের সাংসদ হুঁশিয়ারি দিয়ে এই ডানলপ মোড়ে বলে যাচ্ছি, আপনারা যদি নিজেদের নিয়ন্ত্রণ না করেন তাহলে এরপর যদি আপনাদের কেউ জুতোপেটা করে আপনারা দুঃখ করবেন না, আপত্তি করবেন না।’’ এর সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির স্পষ্ট অভিযোগ বা প্রমাণ আসবে, যেমন পার্থর ক্ষেত্রে এসেছিল, তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসে আর জায়গা হবে না। হতে পারে না, হবে না।’’
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পন্থকে বাদ দেওয়ায় অবাক গম্ভীর, নেটদুনিয়ায় হঠাৎই ট্রেন্ডিং উর্বশী]
জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) মুখ খোলেন সৌগতবাবুর বিরুদ্ধে। বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস যে কীভাবে একজন মার্জিত শিক্ষিত ব্যক্তিকে হার্মাদে রূপান্তরিত করতে পারে তার উদাহরণ হচ্ছে সৌগত রায়ের এই বক্তব্য। তিনি জানেন, আগামিবার তিনি টিকিট পাবেন না। তাই নম্বর বাড়ানোর জন্য এইরকম জ্বালাময়ী বক্তব্য দিচ্ছেন। বয়স হয়েছে। অধ্যাপক মানুষ। তাঁর মুখে এরকম কথা মানায় না। না হলে জনগণ ওঁকে ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের জুতো দিয়ে জুতোপেটা করবে।’’
এ নিয়ে বলতে গিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। বলেন, ‘‘সৌগত রায় বর্ষীয়ান নেতা এবং ভারতবর্ষের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুবক্তা সাংসদ। উনি বারবার যেটা বোঝাতে চাইছেন সেটা এই যে, একটা অত্যন্ত জঘন্য পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে, কোনও বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি অপরাধ করে থাকলে আইন ব্যবস্থা নেবে। তার বদলে গোটা দলকে বা বাকি নেতাদের উদ্দেশ্য করে কোনওরকম খারাপ কেন বলা হবে?’’ তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর তো সারদা ও নারদায় এফআইআরে নাম রয়েছে। তাহলে গোটা বিজেপিটাকে দেখলেই চোর, চোর, চোর বলা হবে? অমিত শাহ (Amit Shah) খুনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাহলে কি গোটা বিজেপিকে এবার খুনি, খুনি, খুনি, খুনি বলা হবে?’’
বিরোধীদের তোপ দেগে এরপর সৌগতবাবুর পাশে দাঁড়ান কুণাল। বলেন, ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার জন্যই এসব বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘একদিন নেট ডাউন থাকলে তো পশ্চিমবঙ্গে বিরোধীরা থাকবে না। বিরোধী মানে তো ফেসবুক, টুইটারে বিবৃতি। তাঁরা যদি এই ধরনের কুৎসা বা কুরুচিকর কাজ বাকিদের ক্ষেত্রে চালান, সেখানে সৌগত রায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙার কথা বলেছেন এবং সতর্ক করেছেন।’’ এর সঙ্গেই বলেন, ‘‘সিপিএমের সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ, কঙ্কালকাণ্ড। তাহলে কি মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী যেখানেই যাবেন সেখানে ও সুজনদা কঙ্কাল কঙ্কাল বলব? এটা তো বলা যায় না। সেটাই সৌগত রায় বলেছেন। বাড়াবাড়ি করলে যথাযথ জবাব যাবে।’’