নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মাথায় হেলমেট ছাড়াই মোটরবাইক নিয়ে র্যালি তৃণমূলের। র্যালিতে পুলিশ থাকলেও সে নিয়ে কোনও হেলদোল নেই কারও। আর যাঁর সমর্থনে বাইক র্যালি, বীরভূম লোকসভার তৃণমূলের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের জবাব, “আনন্দ করে সবাই এসেছে। এই দিনগুলিতে ওদের একটু ছাড় দিতে হবে।”
[আরও পড়ুন: চিনা হরফে প্রচার, ভোটের বাজারে শহরের নজরে ‘চিনের প্রাচীর’]
রাজ্য সরকার ‘সেফ ড্রাইভ সেফ লাইভ’ কর্মসূচি পালন করতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। রাজ্যের মধ্যে দুর্ঘটনার সংখ্যা বীরভূমে অনেক বেশি। সেই দুর্ঘটনা কমাতেই সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে পুলিশ কয়েক মাস ধরে হেলমেটহীন বাইকচালক দেখলেই জরিমানা করতে শুরু করে। কোন কোন ক্ষেত্রের পুলিশ আবার চালকদের সবক শেখাতে হয়, বাইকের চাকার হাওয়া বের করে দিয়েছে কিংবা প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবোস করিয়েছে। কিন্তু, এসবই তৃণমূলের ব়্যালির দিন বেকার। প্রশাসনের যাবতীয় প্রচেষ্টাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শতাব্দীর বাইক ব়্যালিতে শতাধিক হেলমেটবিহীন আরোহী দেখা গেল মাড়গ্রামে। মঙ্গলবার সকালে নির্বাচনী প্রচারে মাড়গ্রামে যান বীরভূম লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। শতাধিক মোটরবাইক সামনে সামনে পথ দেখিয়ে প্রার্থীকে দুটি পঞ্চায়েত এলাকায় নিয়ে যান। অবশ্য প্রার্থী শতাব্দী রায় নিজে ছিলেন হুডখোলা গাড়িতে। বিদায়ী সাংসদ বলেন, “এই সময় মানুষের উচ্ছ্বাস থাকে। ফলে আইনের মধ্যে ফেললে হবে না। হেলমেট পরে ঘুরলে তাদের মুখ দেখা যাবে না। আর আমার সঙ্গে ঘুরছে এটা বোঝাতে গেলে হেলমেট পড়ে ঘুরলে মানুষ চিনতে পারবে? এগুলো ছাড় দিতে হয়।”
[আরও পড়ুন: কমিশনের ভূমিকায় ক্ষোভ মুকুলের, আলোচনা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন সিইও]
অথচ এই পুলিশই মাসখানেক আগে বিজেপির বাইক র্যালি আটকে দেয়। জেলা জুড়ে পঞ্চাশ জনেরও বেশি বিজেপি নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তারও করে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মন বলেন, “প্রথমত শতাব্দী যে দলের প্রার্থী, সেই দলের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী নিজের বড় বড় ছবি দিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ এর বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন বাইক র্যালির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আমরা বিষয়টি লিখিতভাবে রামপুরহাট মহকুমা শাসক তথা সহকারী নির্বাচনী আধিকারিককে জানিয়েছি।” বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডল বলেন, “আমরা এই বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনী আধিকারিকের দ্বারস্ত হব।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারী বলেন, “শাসক দলের সাংসদ হয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা শতাব্দী কিভাবে বলছেন বুঝতে পারছি না। আইন ভাঙলে সবার যেমন শাস্তি হয় এক্ষেত্রে একই সাজা হওয়া উচিত।”
[আরও পড়ুন: ৭ বছরে রাজস্ব থেকে রাজ্যের আয় বেড়েছে তিনগুণ, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী]
রামপুরহাট মহকুমা শাসক নাভেদ আখতার বলেন, “বিষয়টি রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লকের বিডিওকে তদন্ত করে দেখার জন্য বলা হয়েছে। ওই রিপোর্ট হাতে পেলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
ছবি: সুশান্ত পাল
The post ‘একটু ছাড় দিতে হবে’, বাইক ব়্যালিতে হেলমেটহীন সমর্থকদের হয়ে সওয়াল শতাব্দীর appeared first on Sangbad Pratidin.
